ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হালদা হতে আহরিত ডিম থেকে উৎপাদিত প্রতি কেজি রেণুর দাম দেড় লাখ টাকা!

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ৩ জুন ২০২৫

হালদা হতে আহরিত ডিম থেকে উৎপাদিত প্রতি কেজি রেণুর দাম দেড় লাখ টাকা!

ছ‌বি: জনকণ্ঠ

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু সোমবার থেকে বিক্রি শুরু করা হয়েছে। প্রতি কেজি রেণুর দাম দেড় লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গড়দুয়ারা ডিম সংগ্রাহক কামাল সওদাগর। প্রথম দফায় সাড়ে তিন কোটি টাকার রেণু বিক্রির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

এবার প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় রেণু ফোটানোর অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ক্রেতাদের উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে ডিম আহরণকারী ও রেণু উৎপাদনকারীদের মধ্যে। কারণ, বৃষ্টির কারণে রেণু উৎপাদনকেন্দ্রে যাতায়াতের রাস্তা বন্যা ও ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। চাহিদা ও ক্রেতা সমাগমের ওপর ভিত্তি করে রেণুর দাম নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, এবার হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ডিম থেকে কত পরিমাণ রেণু উৎপাদন হয়েছে ও তার বাজারমূল্য কত হতে পারে, তা নির্ধারণে মঙ্গলবার দায়িত্বশীল বিভাগ বৈঠক করার কথা রয়েছে।

একটি অসাধু চক্র কৃত্রিম রেণু বিক্রির চেষ্টায় তৎপর রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ডিম সংগ্রাহক ও রেণু উৎপাদনকারীরা। হালদা নদীর ঐতিহ্য ও সুনাম নষ্ট করছে এই চক্র, এমন অভিযোগ এনে তাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রেণু পোনা বিক্রেতারা।

জানা যায়, সোমবার (২৬ মে) দিবাগত রাতে ও বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১১টার দিকে মা মাছ দুই দফায় নমুনা ডিম ছেড়েছে নদীতে। একই দিন রাতেই নদীতে ব্যাপক হারে ডিম ছেড়ে দেয় মা মাছ। হালদা নদীর অংকুরি ঘোনা থেকে কর্ণফুলীর মোহনা ছায়ার চড় পর্যন্ত অন্তত ১৪টি স্থানে মাছ ডিম ছেড়েছে। এসব স্থান থেকে সাড়ে পাঁচশ’ ডিম সংগ্রাহক আড়াইশ’ নৌকায় করে প্রায় ১৪ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করেন।

শনিবার থেকে আহরিত ডিম থেকে রেণু ফোটানোর কাজ শুরু করেছেন ডিম সংগ্রাহকেরা। সরকারি ৪টি ও বেসরকারি ১২টি হ্যাচারিসহ ৬০টি মাটির কুয়ায় ডিম থেকে রেণু উৎপাদনের কাজ চলছে। প্রথম দফায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার রেণু বিক্রির প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, হালদা নদীর হাটহাজারী অংশ থেকে ৮ হাজার ৩৪৯ বালতি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। রাউজান উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ৪০ বালতি ডিম থেকে এক কেজি রেণু উৎপাদিত হয়। তার হিসাব অনুযায়ী, হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ১৪ হাজার কেজি ডিম থেকে কত কেজি রেণু উৎপাদন হতে পারে, তা সহজেই নির্ধারণ করা সম্ভব।

হালদা থেকে সংগৃহীত ডিম থেকে সম্ভাব্য রেণু উৎপাদন ও বাজারমূল্য নির্ধারণে মঙ্গলবার (৩ জুন) মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নৌ পুলিশ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কর্মকর্তারা যৌথভাবে একটি সভা করেন বলে জানান হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া।

অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রতি কেজি রেণুর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্ধারিত মূল্যে রেণু বিক্রি শুরু হয়েছে।

এম.কে.

×