ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ক্রেতার চাহিদা কম

মোরেলগঞ্জে কামারপাড়ায় নেই সেই টুংটাং শব্দ 

নিজস্ব সংবাদদাতা, মোরেলগঞ্জ, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ২ জুন ২০২৫

মোরেলগঞ্জে কামারপাড়ায় নেই সেই টুংটাং শব্দ 

ঈদকে সামনে রেখে কামার পল্লিতে নেই ব্যস্ততা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কামারপাড়ায় নেই সেই টুংটাং শব্দ। এবারে ক্রেতার চাহিদা কম থাকায় দুশ্চিন্তায় কামার পেশাদাররা। চাপাতি, স্যানা দা, ছুরি নতুন তৈরি করার চেয়ে পুরাতন মেরামতের ভিড়। 
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের কামার পট্ট্রি এলাকার ঐতিহ্য এক সময়ের টুংটাং শব্দে মুখরিত ছিল এ পাড়ায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। আজ কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোয়ায় বদলে গেছে। 
দিন দিন চাহিদা কমে যাওয়ায় এ পেশার মানুষ তাদের পেশা বদালাচ্ছেন। স্বাধীনতার পরবর্তী এ পট্টিতে দু’পাড়ে ২৫-৩০টি দোকান ছিল। সোমবার সেখানে মাত্র ৮টি দোকান। কামার পেশায় নিয়োজিত ৩০-৪০ বছরের কারিগরেরা পড়েছেন দুশ্চিনায়। ঈদ কোরবানি আসলে প্রতিটি দোকানে উৎসবের ১৫ দিন পূর্ব থেকেই বেচা-বিক্রির ধুম পড়ে যেত। এ বছর দোকানগুলোতে তেমন বেচাবিক্রি হচ্ছে না। ঈদুল আজহার বাকি মাত্র ৫ দিন।

প্রতিটি দোকানে সারাদিনে ২-৪ জন ক্রেতার দেখা মিললেও সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দা, চাপাতি, ছুরি নতুন তৈরি করছে না ক্রেতারা, টুংটাং শব্দ নেই দোকানগুলোতে। রেলপার্টির লোহা ১২৫ টাকা কেজি এবং স্প্রিং লোহা কেজি ১০০ টাকা। একটা নতুন দা তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ৪৫০-৫শ’ টাকা এবং গরু জবাইয়ের ছুরি ৮শ’-১২শ’ টাকা, চাপাতি ১ হাজার থেকে ১৫শ’ টাকা। তবে, বেশিরভাগই পুরাতন মালামাল নিয়ে গৃহস্থরা পাইন দিতে আসছেন কামারদের কাছে।       
কথা হয় এ পেশায় নিয়োজিত কারিগর স্বপন কর্মকার, বিধান চন্দ্র বালা, উত্তম কর্মকর্তার, সঞ্চয় কর্মকার, বুলু কর্মকার নারায়ণ কর্মর্কার বলেন, বাপ দাদার পেশা বদলাতেও পারছি না। 
এখানে যারা কারিগর রয়েছেন দু’একজন নতুন হলেও বেশিরভাগই ব্যবসায়ী ৩০-৪০ বছরের পুরাতন। কয়েক যুগ ধরে এ পেশার সঙ্গে কাজ করছেন। ঈদের বাকি মাত্র কয়দিন এ বছর ক্রেতাদের চাহিদা নেই বললেই চলে। অগ্রিম বিক্রির জন্য অনেক টাকার মালামাল এনে দোকানে রাখা হয়েছে, এ মৌসুমে তা বিক্রি করে টাকা তোলা যাবে না। তার পরেও প্রতিটি দোকানে একজন করে শ্রমিকের বেতন দিতে হয় মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা। অগ্রিম ৪০-৫০ হাজার টাকা দিয়ে আনতে হয় শ্রমিকদের। 
গত বছর কয়লার বস্তা ছিল ৮শ’ টাকা এ বছর তা কিনতে হচ্ছে ১৬শ’ টাকায়, বিদ্যুৎ বিলও দ্বিগুণ। কীভাবে ব্যবসা করে পরিবার পরিজন নিয়ে চলব। এ পেশা ধরে রাখতে হলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিনা সুদে লোন দেওয়ার দাবি জানান।

×