
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
ঠাকুরগাঁও-রুহিয়া-আটোয়ারী-পঞ্চগড় আঞ্চলিক সড়কটি পাকা, ব্রিজ-কালভার্টসহ পরিপূর্ণ অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ এক দশক ধরে এই রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ। ফলে বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ।
প্রতিদিন এই সড়কে যাতায়াত করছেন হাজারো মানুষ—ছাত্রছাত্রী, কর্মজীবী, ব্যবসায়ী ও রোগী। কিন্তু তাদের ভরসা এখন ‘পাগলু’, নসিমন, ভটভটি, ব্যাটারিচালিত অটো বা ভ্যান। এসব যানবাহনের কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকেই আহত, কেউ কেউ প্রাণ হারিয়েছেন বা পঙ্গু হয়েছেন।
স্থানীয় শিক্ষক রাবেয়া সুলতানা বলেন, “আমাদের সময় স্কুলে যেতাম বাসে। এখনকার শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে যেতে হয় ছোট ছোট অটোরিকশায়—খুবই দুঃখজনক।”
ব্যবসায়ী রিংকু জানান, “বাসস্ট্যান্ডে দোকান ছিল, বাস বন্ধ হতেই সব শেষ হয়ে যায়। ঢাকায় গিয়ে এখন জীবন চালাতে হয়।”
রুহিয়া চৌরাস্তায় অপেক্ষমান মৌসুমি আক্তার বলেন, “অটো কখন ছাড়বে জানি না। কিন্তু আর কোনো উপায় নেই। বাস থাকলে এই কষ্ট হতো না।”
রুহিয়া-পঞ্চগড় বাসস্ট্যান্ডের বুকিং মাস্টার সাইফুল ইসলাম জানান, “বাস বন্ধ হওয়ার পর অনেকদিন বেকার ছিলাম। এখন অটো চালিয়ে কোনোভাবে সংসার চলছে।”
রুহিয়া থানা শ্রমিক দলের সভাপতি দবিরুল ইসলাম জানান, “অবৈধ পাগলু ও থ্রি-হুইলার চলায় বাস চালানো যাচ্ছে না। তবে আবারও উদ্যোগ নেব।”
জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল জব্বার বলেন, “গত সপ্তাহে মোটর মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠকে পরীক্ষামূলকভাবে সাত দিনের জন্য গেটলক বাস সার্ভিস চালুর প্রস্তাব দিয়েছি। প্রয়োজনে কমিটি গঠন করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করব।”
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, “বাস চালুর জন্য স্থানীয় শ্রমিক নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা সর্বোতভাবে সহায়তা করবে।”
ঠাকুরগাঁও-রুহিয়া-আটোয়ারী-পঞ্চগড় রুটে বাস চলাচল চালু হলে শুধু পরিবহন ব্যবস্থা নয়, সচল হবে একটি পুরো অঞ্চল। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানোর নিশ্চয়তা—এই সবই ফিরে পাবে স্থানীয়রা। বাস চালুর দাবি এখন সময়ের দাবি নয়, মানুষের অধিকার।
নোভা