ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সড়কে ধস, যাত্রায় সর্বনাশ: দৌলতদিয়া-খুলনা পথে আতঙ্কের রাজত্ব

শফিকুল ইসলাম শামীম, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৩০ মে ২০২৫

সড়কে ধস, যাত্রায় সর্বনাশ: দৌলতদিয়া-খুলনা পথে আতঙ্কের রাজত্ব

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া প্রান্তে টানা ভারি বর্ষণে সৃষ্ট ভাঙনে সড়কের একাধিক স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মহাসড়কটিতে যান চলাচল চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার অন্তত চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়কের পাশ ধসে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতে এই ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়ছে। কিন্তু দুই দিন কেটে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন কিংবা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ থেকে নেওয়া হয়নি কোনো জরুরি ব্যবস্থা। ফলে হাজারো যাত্রী ও যানবাহন চালককে পড়তে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগে।

সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের পরিবহণ চলাচল করে। ঈদ ও অন্যান্য ছুটির মৌসুমে এই সড়কেই তৈরি হয় সবচেয়ে বেশি চাপ। এমন সময়ে সড়কের এই নাজুক অবস্থা যে কোনো সময় ঘটাতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসচালক আব্দুল জব্বার বলেন,“রাতে বা ভোরে গাড়ি চালাতে খুব ভয় লাগে। হঠাৎ গর্তে পড়লে গাড়ি উল্টে যেতে পারে। এখনো বড় কোনো দুর্ঘটনা হয়নি, তবে যে কোনো সময় ঘটতে পারে।”

একাধিক ট্রাক চালক বলেন, “এই সড়কে অর্থাৎ দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ৫ কিলোমিটার রাস্তায় এত বেশি গর্ত হয়েছে যে ঠিকমতো স্টিয়ারিং সামলানোও কঠিন হয়ে যায়। আমরা দাবি জানাই দ্রুত যেন এই গর্তগুলো ভরাট করা হয়।”

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার স্থানীয় বসতিরা জানান, বাংলাদেশ হ্যাচারি থেকে দৌলতদিয়া ট্র্যাফিক পুলিশ কন্ট্রোল রুম পর্যন্ত ফোর লেন রাস্তা। এই রাস্তার একপাশে সারা বছর অসংখ্য গর্ত হয়ে থাকে। বৃষ্টি আরও বেশি গর্ত সৃষ্টি হয়। এদিকে এই একাধিক পয়েন্টে মহাসড়কের পাড় ধসে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় ধরনের গর্ত। কিন্তু দায়িত্বরত ব্যক্তিরা এখনো পর্যন্ত চোখের দেখা দেখতে আসেনি। 

স্থানীয়রা আরও জানান, “সড়ক ধসে যাওয়া বিষয়টি আমরা সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তবে বাস্তবে এখনো কোনো কাজ শুরু হয়নি।”

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, দৌলতদিয়া প্রান্তে এই অংশটি দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত। প্রতিবার বৃষ্টিপাত বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে একই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়, কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।

সড়কের অবস্থা আরও অবনতি ঘটার আগে জরুরি মেরামতের উদ্যোগ না নিলে যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা। এমন শঙ্কা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাজস খান বলেন, “প্রচণ্ড ভারি বৃষ্টিতে দৌলতদিয়া এলাকায় রাস্তার কিছু ক্ষতি হয়েছে। জরুরি ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মেরামত করা হবে।”     

মিরাজ খান

×