
ছবি : জনকণ্ঠ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ, টানা ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ার পর থেকে মিরসরাই উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ফলে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে জনজীবন। অনেকের আইপিএসের চার্জ শেষ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মিরসরাইয়ে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হলেও দুপুর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়ার কারণে বিকেলে উপজেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।
মো. মাসুম উদ্দিন নামে এক যুবক বলেন, “মিরসরাই পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের নাম্বারে ফোন দিলে ব্যস্ত বলে এবং ফোন রিসিভ হয় না। আমরা যারা গ্রামে থাকি, আমাদের খবর কেউ রাখে না। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল বন্ধ হয়ে গেছে, আত্মীয়-স্বজনসহ কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।”
অটোরিকশা চালক মহিউদ্দিন বলেন, “হালকা একটু বৃষ্টি আর বাতাস হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। যাওয়ার পর আর আসার কোনো খোঁজ থাকে না। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর বিদ্যুৎ গেছে, ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় হয়ে গেছে, এখনো বিদ্যুৎ আসেনি। বিদ্যুৎ না থাকায় গাড়িতে চার্জ দিতে পারিনি। এই গাড়ি চালিয়েই আমার সংসার চলে।”
মো. আরিফ নামের আরেক যুবক বলেন, “দীর্ঘ এত ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় বিপাকে পড়েছি। মোবাইলে চার্জ না থাকায় আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।”
সাহেরখালী ইউনিয়নের নাজমা আক্তার লাকি বলেন, “আমাদের এখানে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ না থাকায় আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। এছাড়া মোবাইলের নেটওয়ার্কও নেই।”
রুপা আক্তার নামে এক গৃহবধূ বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং মোটরের পানি তুলতে পারছি না। এতে করে গোসল ও ওয়াশরুমে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে ঘরে ছোট বাচ্চা এবং শ্বশুর-শাশুড়ি রয়েছে।”
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম আদনান আহম্মদ চৌধুরী বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে দমকা বাতাসের কারণে অনেক জায়গায় খুঁটি পড়ে গেছে। তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। প্রায় ১১২টি স্পটে সমস্যা হয়েছে। আমাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আগামীকাল নাগাদ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে। তবে আবার দমকা বাতাস শুরু হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।”
সানজানা