সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে গোটা নীলফামারী জেলায় টহল এবং চেকপোস্ট কার্যক্রম জোড়দার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুর থেকে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। যা চলমান থাকবে। এদিকে সেনাবাহিনীর অভিযানে এক প্রতারক যুবকও গ্রেপ্তার হয়েছে।
সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা, অপরাধ দমন এবং জনসাধারণের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তাবোধ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় বলে জানান ক্যাম্প কমান্ডার, নীলফামারী আর্মি ক্যাম্প।সেনাবাহিনীর সদস্যরা বর্তমানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা এবং জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। বিশেষ করে সন্ধ্যা ও রাতের সময় টহল আরও জোরদার করা হয়েছে যাতে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়। টহলকালে সেনাসদস্যরা শুধু নজরদারি নয়, বরং জনগণের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ শুনছেন এবং তাৎণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
স্থানীয় বেশ কয়জন বাসিন্দারা সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সেনাসদস্যদের নিয়মিত উপস্থিতি তাদের মধ্যে এক ধরনের মানসিক নিরাপত্তা তৈরি করেছে। অনেকে জানিয়েছেন, আগে সন্ধ্যার পর যারা বাইরে বের হতে সংকোচ বোধ করতেন, এখন তারা অনেকটাই নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীগণ বলেন, "সেনাবাহিনী যেভাবে টহল দিচ্ছেন, তাতে করে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন হচ্ছে। আমরা চাই, এই টহল কার্যক্রম চলমান থাকুক।"
ক্যাম্প কমান্ডার আরও বলেন, সেনাবাহিনী শুধু নিরাপত্তা নিশ্চিতে নয়, বরং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার মধ্য দিয়েও একটি সহনশীল ও স্থিতিশীল সামাজিক পরিবেশ গড়ে তুলতে কাজ করছে। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে জনগণ যেন সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহায়তা পেতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
নীলফামারী সেনা ক্যাম্প কর্তৃক গৃহীত এই ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে একটি কার্যকর ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জনগণের পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলার এই প্রচেষ্টা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে সদর উপজেলার চাপড়া সরমজানী ইউনিয়নের যাদুরহাট এলাকা থেকে ভুয়া সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তার করা যুবকের নাম আবির এলাকায় বেড়াডাঙ্গা এলাকায় বস্তার ব্যবসা করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নীলফামারী ক্যাম্পের একজন বলেন, নীলফামারী ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মোঃ সালমান তারেক রিফাতের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।নীলফামারী ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মোঃ সালমান তারেক রিফাত বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীর নাম ও ছবি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবির স্বীকার করেছে সেনা সদস্যদের ছবি ব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত এবং বিভিন্ন ভাবে অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
নীলফামারী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এম আর সাঈদ বলেন, এ ঘটনায় আবিরের নামে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
আঁখি
