
ছবি: সংগৃহীত
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) বাংলাদেশকে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসে অবস্থিত প্রধান কার্যালয় ও কারখানার জমি ছাড়তে হবে, কারণ সুপ্রিম কোর্ট তাদের লিজ নবায়ন সংক্রান্ত আপিল খারিজ করে দিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আজ (বুধবার) বিএটি বাংলাদেশের করা আপিল খারিজ করেন। তারা ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সঙ্গে জমির লিজ চুক্তি নবায়নের আবেদন করেছিলেন, যা পূর্বে হাইকোর্টও খারিজ করে দেয়।
গত বছর ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট কোম্পানির রিট আবেদন খারিজ করে দেয়, যেখানে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের লিজ নবায়ন না করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।
১৯৬৪ সাল থেকে লিজে কারখানা পরিচালনা
বিএটি বাংলাদেশের ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি ১৯৬৪ সাল থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কাছ থেকে জমি লিজে নিয়ে মোহাখালীতে কারখানা পরিচালনা করছে। প্রতি মেয়াদ ৩০ বছর করে ধরা হলেও সর্বমোট ৯০ বছর পর্যন্ত নবায়নের সুযোগ ছিল।
তবে সর্বশেষ মেয়াদ শেষে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড লিজ নবায়নে রাজি না হওয়ায়, কোম্পানিটি আদালতের দ্বারস্থ হয়।
পরিবেশবাদীদের প্রতিবাদ
মোহাখালী কারখানা সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে পরিবেশবাদীরা একাধিকবার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। তারা কারখানার দূষণজনিত প্রভাবের কথা তুলে ধরে স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিল।
প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও আর্থিক অবস্থান
-
প্রথম কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৯ সালে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে।
-
১৯৬৫ সালে মোহাখালীতে দ্বিতীয় কারখানা স্থাপন করে পাকিস্তান টোব্যাকো কোম্পানি।
-
স্বাধীনতার পর কোম্পানির নাম হয় বাংলাদেশ টোব্যাকো কোম্পানি এবং ১৯৯৮ সালে পরিবর্তন হয়ে হয় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ।
-
১৯৭৭ সালে কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।
বর্তমানে কোম্পানির তিনটি কারখানা রয়েছে — মোহাখালী, সাভার ও মানিকগঞ্জে। এছাড়া কুষ্টিয়ায় রয়েছে একটি গ্রিন লিফ থ্রেশিং প্ল্যান্ট।
রাজস্ব ও মুনাফা
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির মোট রাজস্ব হয়েছে ৯,৫৯৭ কোটি টাকা, যদিও সিগারেট বিক্রিতে ধস নেমেছে। নিট মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ২৩% হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৮ কোটি টাকায়। কোম্পানির শেয়ারের দর আজ ৫.৯৭% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৮ টাকায়।
গত অর্থবছরে বিএটি বাংলাদেশ ৩০০% নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে এবং তাদের মোট রাজস্ব ছিল ৪৩,২৩১ কোটি টাকা, নিট মুনাফা ছিল ১,৭৫১ কোটি টাকা। আদালতের রায়ের পর কোম্পানির পরবর্তী করণীয় নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আঁখি