
ছবি: সংগৃহীত
উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষার্থী থাকতে চাইলে ঈদের ছুটিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলগুলো খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি। বুধবার (২৮ মে) ছুটিতে হল খোলা রাখার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সাংবাদিক সাংবাদিকদের এই কথা বলেন তিনি।
ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, হল খোলা রাখার বিষয়ে আমরা পজিটিভ। ছুটিতে যারা হলে থাকতে চায় তাদেরকে লিখিতভাবে স্ব স্ব হল প্রভোস্টের কাছে আবেদন দিতে বলেছি। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষার্থী যদি থাকতে চায় তাহলে আমরা হল খোলা রাখবো।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আযহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে আগামী ৩১ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস-পরীক্ষা ও অফিসসমূহ বন্ধ থাকবে। এই বন্ধকালীন সময়ের মধ্যে ৪ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার বিষয়ে ভাবছে প্রভোস্ট কাউন্সিল। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পূর্ণ ছুটিতেই হল খোলা রাখা হোক।
এ দাবিতে বুধবার (২৮ মে) মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের ‘ছুটির নামে হল বন্ধের প্রহসন মানি না’, ‘শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা আর না’, ঢাবি, রাবি, জাবি পারলে ইবি কেন নয়?‘ ইত্যাদি লেখ্যা সম্বলিত বিভিন্ন ফেস্টুন প্রদর্শন করতে দেখা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতি বছর ঈদে ইবির সকল হল দীর্ঘদিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। যা শিক্ষার্থীদের জন্য চরম ভোগান্তির। ছুটিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কেন বন্ধ করা হবে? বহু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত যারা ঈদুল আজহা উদযাপন করেন না। ছুটির সময় হলে বন্ধ থাকলে তাঁদের নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ে। ছুটির পরপরই ৪৭তম বিসিএসসহ একাধিক সরকারি ও বেসরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী হলেই এসব পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হল বন্ধ হলে তাঁদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে। এছাড়া স্নাতকোত্তর ও গবেষণামূলক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চলমান থিসিস, গবেষণা প্রকল্প এবং ল্যাবরেটরি কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। হল বন্ধ হলে এসব কাজ অনিশ্চয়তায় পড়বে।
তারা আরো বলেন, ঈদের পরপরই বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল, মধ্যবর্তী মূল্যায়ন ও প্রেজেন্টেশন থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসেই সেগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের পড়াশোনায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য হল খোলা রাখা। দূরবর্তী অনেক শিক্ষার্থী বন্ধে ক্যাম্পাসে থাকেন। কিন্তু হল বন্ধ করে দিলে তাদের থাকাে জন্য কোনো ব্যবস্থা নাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর আগে বিভিন্ন সময়ে হল খোলা রাখার বিষয়ে আমাদের বলেছেন। কিন্তু এখন তারাই হল বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল খোলা রাখার দাবি জানাই।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি প্রদানের জন্য উপাচার্যের কার্যালয়ে যান। তবে এসময় উপাচার্য না থাকায় তারা স্মারকলিপি নিয়ে কোষাধ্যক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের দাবি তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তোমরা যারা হলে থাকতে চাও তারা তোমাদের হলের প্রভোস্টকে তোমাদের চাহিদার কথা জানাও। তারা প্রভোস্ট কাউন্সিলকে জানাবে এবং প্রভোস্ট কাউন্সিল আমাদের সাথে বসবে। হল খোলা রাখার বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিল পজিটিভ হলে আমরাও পজিটিভ।
আসিফ