সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা নির্মাণাধীন শহীদ মামুন হল খুলে দেওয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল (১৯ মে ) বিকাল চারটা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি আজ ও অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে বসে তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, শহীদ মামুন হল দ্রুত খুলে দেওয়া এবং সিট বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, হল বন্ধ থাকায় তাদের বাইরে বাসা বা মেস ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে, যা অনেকের জন্য অর্থনৈতিকভাবে কষ্টসাধ্য। এ ছাড়া নিরাপত্তার অভাব ও পরিবেশগত সমস্যাও তাদের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এ বিষয়ে কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) আওতায় হলের নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। সেজন্য ইইডি এখনো কলেজ প্রশাসনের কাছে হল হস্তান্তর করেনি এদিকে ডেসকোর বিদ্যুৎ সংযোগে জটিলতা ও লিফট চালু না হওয়ায় হল খোলা সম্ভব হচ্ছে না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আলি আহমেদ বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছি। এখন আমাদের দাবি হল খুলে দিতে হবে এবং বৈধ শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। না হলে আন্দোলন চলবে।"
আরেক শিক্ষার্থী নায়েক নূর মোহাম্মদ বলেন,আমরা গতকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি করছি। গতকাল রাতে হল সুপার আল নূর স্যার আমাদের কাছে এসেছিলেন, তিনি আমাদের বলেছেন আজ হল কমিটি ও অধ্যক্ষ স্যারের সাথে মিটিং এরপর সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আমরা এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
দাবি পূরণ না হলে তাদের পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা হল খুলে দেওয়ার দাবিতে এখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। স্যাররা যদি সিদ্ধান্ত নেয় হল খুলে দিবে অথবা একটি সময় বেঁধে দেয় যে কতদিনের মধ্যে হল খুলবে তারপরেই আমরা এই স্থান ত্যাগ করব নতুবা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দিন আহমেদ বলেন, "আমি দ্রুত বৈধ শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশের ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বারবার সময় দিলেও কাজ শেষ করছে না, ফলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।"
এদিকে কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দাবিকে যৌক্তিক বলে মনে করলেও, তারা হল খোলার আগে নিরাপত্তা ও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়া জরুরি বলে মত দিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশাসনের বক্তব্য ঘিরে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তারা মনে করছেন, সংস্কার কাজের দীর্ঘসূত্রিতা তাদের শিক্ষাজীবনে বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, তিতুমীর কলেজে ছাত্রদের জন্য দুটি হল থাকলেও, আক্কাসুর রহমান আঁখি হল গত বছর ১৮ জুলাই ভাঙচুরের ঘটনায় বন্ধ হয়ে যায়। শহীদ মামুন হল এখনো নির্মাণাধীন অবস্থায় রয়েছে এবং কাজ চলছে ধীরগতিতে। ফলে শতভাগ ছাত্রকে মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে, যা ক্রমেই আবাসন সংকটকে তীব্র করে তুলছে। এতে করে দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের ঢাকার মতো ব্যয়বহুল শহরে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।
মুমু
