
ছবিঃ সংগৃহীত
যে বন্দি বিনিময় চুক্তি একসময় ভারতকে সুবিধা দিতে করেছিল নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকার, আজ সেটিই পরিণত হয়েছে তাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার হাতিয়ার হিসেবে। ২০১১ সালে ভারত-বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে ২০২৫ সালে এসে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, ওই চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার আইনি সুযোগ রয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “আমরা আদালতের নির্দেশে কাজ করছি। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”
শুধু শেখ হাসিনা নয়, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তার ভাগ্নি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককেও দেশে ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান দুদক চেয়ারম্যান। তিনি স্পষ্ট বলেন, “তদন্ত চলছে, আইনি প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”
আন্তর্জাতিক আইনি সহায়তা, কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা বিষয়ে আলোচনা চলছে। ২০১১ সালে করা ভারতের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তিতে বলা হয়েছে, উভয় দেশের আদালতের আদেশ থাকলে দণ্ডপ্রাপ্ত বা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দেশে ফেরত পাঠানো যেতে পারে।
তবে রাজনৈতিক আশ্রয়, আন্তর্জাতিক চাপ এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি – এসব বিষয় ফেরত আনার পথে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সরকারের এই পদক্ষেপ শুধু আইনি প্রয়োগ নয়, রাজনৈতিক বার্তাও। যেই দল একসময় ক্ষমতায় থেকে নিজ দলের নেত্রীর প্রত্যাবর্তনের পথ তৈরি করেছিল, আজ সেই পথেই তাকে ফেরানোর উদ্যোগ চলছে।
এক দশক আগের একটি চুক্তি এখন নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ে। শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার চেষ্টা কতটা সফল হবে তা নির্ভর করবে শুধু আইনি প্রক্রিয়ার উপর নয় বরং সবকিছু এখন নির্ভর করছে ভারতের রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার ওপর।
ইমরান