
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ভারত ও পাকিস্তান, দুই প্রতিবেশী দেশই সমান গুরুত্বপূর্ণ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানির বড় অংশ আসে ভারত থেকে। পাশাপাশি রপ্তানির ক্ষেত্রেও ভারত একটি সম্ভাবনাময় বাজারে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের পর সেখানে বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৌশলী ও ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে উভয় দেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে।
বাণিজ্যিকভাবে ভারতের ওপর নির্ভরতা বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘদিনের। তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান অনন্ত গ্রুপ প্রতিবছর ভারতের বাজারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করে। প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনায় ভারতীয় ক্রেতারা কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। যদিও বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি, তবে পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে সম্ভাবনাময় এই বাজার ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
এক কর্মকর্তা বলেন, “ব্যবসার দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত কেবল আমাদের কাঁচামালের উৎসই নয়, একটি বড় মার্কেটও বটে। পাকিস্তানের সঙ্গেও আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে, যেখান থেকে আমরা প্রচুর ফ্যাব্রিক আমদানি করি।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ অর্থবছরে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। এর মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে পাকিস্তানে রপ্তানি হয়েছে সাড়ে ছয় কোটি ডলারের পণ্য, যেখানে সম্ভাবনা রয়েছে কয়েক গুণ বৃদ্ধির।
বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে ‘নিউট্রাল’ পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তিতে অর্থনৈতিক কূটনীতি আরও জোরদার করতে হবে। এক বিশেষজ্ঞ বলেন, “আমাদের স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে বিকল্প আমদানি উৎস তৈরি করতে হবে। কেবল ভারত ও পাকিস্তানের ওপর নির্ভর না থেকে আমদানি উৎসে বৈচিত্র্য আনাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।”
বর্তমানে বাংলাদেশ জিডিপির প্রায় ৩ শতাংশ বাণিজ্যে ভারত ও পাকিস্তানের ওপর নির্ভরশীল। তাই যুদ্ধ বা অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী হলে এ অঞ্চলের বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্যই এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এখন সময়ের দাবি।
আঁখি