ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

সেতুর অভাবে ভোগান্তি

সংবাদদাতা, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ০১:০৮, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সেতুর অভাবে ভোগান্তি

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ধলেশ্বরী নদীর রাজৈর ঘাটে নৌকায় পারাপার

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের গোপালপুরের ধলেশ্বরী নদীর রাজৈর ঘাটে দীর্ঘ দিনেও সেতু নির্মিত না হওয়ায় জনসাধারণকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পাড়ি দিতে হয়। আশপাশের কয়েক উপজেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম হলো এই খেয়া নৌকা। গোপালপুরের রাজৈর খেয়াঘাটে সেতুটি হলে সহজ হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রায় সাত বছর আগে ধলেশ্বরী নদীর গর্ভে মাটির সয়েল টেস্ট করা হলেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি এলাকাবাসী। সেতুটি না হওয়ায় নানা সমস্যায় পড়ছেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। 
জানা গেছে, রাজৈরের এই খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন টাঙ্গাইলের নাগরপুর, সিরাজগঞ্জের চৌহালী, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ও ঘিওরের মানুষজন আসা-যাওয়া করে। ইঞ্জিনচালিত দুটি নৌকা দিয়ে প্রতিদিন ফজরের আজানের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মানুষ পারাপার করে থাকে নৌকার মাঝিরা। ধলেশ্বরী নদীর বুকে সেতুটি হলে কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে সেতুবন্ধনে মিলনমেলা ঘটবে এবং উপকার হবে কৃষক ও সাধারণ মানুষের।
স্থানীয়রা জানান, গোপালপুর বাজারে দুধ বিক্রি করতে ওপার থেকে প্রতিদিন চার শতাধিক প্রান্তিক কৃষক ও খামারি গাভীর দুধ ও কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে খেয়া পারাপার হয়ে থাকে। এক ঘণ্টার বাজারে একবার খেয়া পার হতে না পারলে প্রায় এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। ফলে বাজার ধরতে কৃষক ও দুধ বিক্রেতাদের ভোরে এসে খেয়াঘাটে ভিড় জমায়। 
স্থানীয় কৃষক পাখি মিয়া বলেন, ধলেশ্বরী নদী ভাঙনের কবলে পড়ে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছি। নদী ভেঙে বড় হচ্ছে। আমাদের এপার-ওপারের জমির আবাদি ফসল ও গরু-ছাগল নিয়ে খেয়া পারাপার ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই। দিনে চার-পাঁচবার খেয়া পারাপার হতে হয়। এতে কৃষকদের কর্মঘণ্টাও বেশি লাগে। 
কয়েকটি উপজেলার মানুষের পারাপার হওয়ায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সময়মতো হাট-বাজারে উৎপাদিত ফসল বেচাকেনা করতে পারি না। শুনেছি সেতু হবে, কবে হবে জানি না। 
সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজৈর খেয়াঘাটে ৩৪০ মিটার লম্বা সেতুটি নির্মাণ করার জন্য আনমানিক ব্যয় একশ’ কোটি টাকা চেয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। বিষয়টি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে সেতুর ডিজাইনের কাজ শেষ হয়েছে। পরে টাকা চেয়ে একনেকের সভায় পাঠানো হলে তা অনুমোদন হয়। ইতোমধ্যে কয়েকটি টিম সেতু নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেছেন। কয়েকদিনের মধ্যে চলবে মাটির সয়েল টেস্ট ও নদী শাসনের কাজ।
উপজেলা প্রকৌশলী নাজমুল করিম বলেন, রাজৈর খেয়াঘাটে সেতুর ডিজাইন হাতে পেয়েছি। নদীর ভূগর্ভস্থ আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নদী শাসনের কাজ করা হবে। সেতুটি নির্মাণ করতে আনুমানিক একশ’ থেকে দেড়শ’ কোটি টাকা লাগবে। সেতুর পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে আরও দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

×