
চালিতাবুনিয়া গ্রামের প্রতিবন্ধী ৯০ বছর বয়সী আলেয়া বেগম ছেলের কোলে এসে ঘরের চাবি নিচ্ছেন
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের সঙ্গে যশোরে পাঁচ উপজেলার ১৮৮ জনকে ঘর দুই শতাংশ জায়গাসহ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে উপহার হিসেবে বিতরণ করেছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলার ৫৮ জনকে ঘর ও জমি দেওয়ার মধ্য দিয়ে এ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। বুধবার সকালে সদর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপহারের জমিসহ ঘর নিতে আসেন দৃষ্টিহীন ঝন্টু বাঁশফোড় ও তার স্ত্রী যমুনা সাহা। ঝন্টু বাঁশফোড় বলেন, আমাগের অন্ধের ঘরে প্রধানমন্ত্রী আলো জ্বেলেছে। ৪০ বছর আগে এক্সিডেন্টে দুই চোখ হারিয়েছি। আমি কাজকর্মে অক্ষম। আমার স্ত্রী হাট-বাজারে ঝাড়ু দিয়ে আয়-রোজগার করে। তাই দিয়ে আমাগের সংসার চলে। দুই ছেলেমেয়ে তার মধ্যে ছেলেডা প্রতিবন্ধী। আমাগের কোনোকালে মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না।
প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে মাথা গোঁজার ঠাঁই পালাম।’ যমুনা সাহা বলেন, আমরা কোনোদিন কল্পনা করতে পারিনি যে আমাদের নিজস্ব মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে। সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার বাপ-দাদাদের কোনো কালে জায়গাজমি ছিল না। স্বাধীনতার পর থেকেই পরের বাড়ি ভাড়া থেকেছি। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে আমরা অনেক খুশি।
মুকসুদপুর
নিজস্ব সংবাদদাতা মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ থেকে জানান, শেখের বেটি ঘর দিয়েছে, এখন আমি জমিসহ বাড়ির মালিক। আমি প্রতিবন্ধী হয়ে, সমাজের একটা বোঝা মনে করতাম নিজেকে। আমার পরিবারও আমাকে তাদের বোঝা মনে করত। আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। আমার নিজের বলতে কিছুই ছিল না। এখন জমিসহ একটা ঘরের মালিক, একটা বাড়ির মালিক। আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ হলরুমে প্রধানমন্ত্রীর মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান অনুষ্ঠানে জমিসহ ঘর পেয়ে এসব কথা বলছিলেন প্রতিবন্ধী তানজিলা। উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের ফতেপট্টিতে ৪০ সুবিধাভোগীর মাঝে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়। এনিয়ে মুকসুদপুর উপজেলায় ৫৯৩ ঘর সুবিধাভোগীর নিকট হস্তান্তর করার মাধ্যমে মুকসুদপুরকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করা হয়।
আমতলী
নিজস্ব সংবাদদাতা আমতলী, বরগুনা থেকে জানান, শেখের বেটির উছিলায় মুই বুড়া বয়সে পোলা লইয়্যা শান্তিতে ঘুমাইতে পারমু। মুই হারা জীবন ভাঙা ঘরে আলহাম। বইন্ন্যা আর দেউইতে মুই পোলাডারে লইয়্যা কষ্ট হরছি। এ্যাহন শেখের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোরে থাহার লইগ্যা একটা ইডের ঘর দেছে। হেই ঘরে মুই পোলা লইয়্যা থাকতে পারমু। এ্যাহন আর মোর দেওইয়্যার ডর নাই। শীতে আর কষ্ট হরতে অইবে না।
মুই শেখের বেটির জন্য দোয়া হরি যেন আল্লায় হ্যারে অনেক বচ্ছর বাচাইয়্যা রাহে। ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে বুধবার ছেলে হানিফের কোলে জমির দলিল ও ঘরে চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের ৯০ বছর বয়সি প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা আলেয়া বেগম এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর এমন মহতী উদ্যোগে উপজেলার ৬৬৭ পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন। উপজেলার সব অসচ্ছল, ভূমিহীন ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে গৃহ ও জমি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।
গুলিশাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা মাজেদা বেগম, খাদিজা ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের মুনসুরা বেগম, আল-আমির ও ফাতেমা বলেন, জীবনে স্বপ্নেও দেখি নাই পাকা ঘরে থাকব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের পাকা ঘর ও জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সারা জীবন প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করব এবং পাশে থাকব। উপজেলায় ৬৬৭ হতদরিদ্র গৃহহীন পরিবারকে গৃহনির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।