
.
এমন ভোজনরসিক খুঁজে পাওয়া মুশকিল, যিনি বিরিয়ানি পছন্দ করেন না। যে কোনো মুহূর্তে বিরিয়ানি খেতে বেশিরভাগ খাদ্যরসিক এক কথায় রাজি হয়ে যাবেন। ভোজনরসিকদের প্রিয় সেই বিরিয়ানি এবার হোটেল বা রেস্তোরাঁর গন্ডি পেরিয়ে চলে আসছে একেবারে বাড়ির দুয়ারে! ফোন দিলেই হাঁড়িভর্তি গরম গরম বিরিয়ানি নিয়ে বাড়ির সামনে হাজির হচ্ছেন বিক্রেতা। মিলছে পছন্দমতো মাংসের টুকরো। তা-ও মাত্র ৮৯ টাকায়! এই সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে যশোর শহরে। আবির হোসেন নামে এক যুবক সাইকেলের পেছনে হাঁড়ি বেঁধে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন এই বিরিয়ানি।
পুরো শহরে আবিরের চারজন লোক ছুটে যাচ্ছেন ক্রেতাদের বাড়ির দুয়ারে। অল্প দিনের মধ্যে যশোর শহরে আবিরের বিরিয়ানি সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তার ফেরি করে বিরিয়ানি বিক্রি। আবির হোসেনের বাড়ি যশোর শহরের উপশহর এলাকায়। করোনাকালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে পড়ালেখায় ইতি টেনে সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের জন্য কিছু একটা করার। সে জন্য রেস্তোরাঁ ব্যবসার কথা ভাবেন তিনি। এতদিন মূলধনের কারণে সেটি করতে না পারলেও গত রমজানের আগে বড় বোন সোনিয়া আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে শহরের সরকারি এমএম কলেজের আসাদ গেট এলাকায় পৌর হকার্স মার্কেটে চালু করেন স্বপ্ন ফুড কর্নার নামে একটি রেস্তোরাঁ। এই রেস্তোরাঁয় আগে চাইনিজ খাবারের সঙ্গে বিরিয়ানিও বিক্রি করা হতো। তবে চাইনিজ খাবারের মতো বিরিয়ানির তেমন একটা চাহিদা ছিল না।
এ কারণে আবির সিদ্ধান্ত নেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিরিয়ানি বিক্রি করার। এরপর সাইকেলের পেছনে একটি হাঁড়িতে লাল কাপড় বেঁধে রাস্তায় রাস্তায় বিরিয়ানি বিক্রি শুরু করেন। তিনি এর নাম দেন ‘দুয়ারে বিরিয়ানি’। আবির হোসেন জানান, যশোর শহরের হকার্স মার্কেট এলাকা শিক্ষার্থী অধ্যুষিত অঞ্চল হওয়ায় সেখানে সব ধরনের খাবার চলত না। দোকানে যে সংখ্যায় ক্রেতার সমাগম হতো, তাতেও খুব একটা লাভ হতো না। বরং খাবার বেঁচে যাওয়ায় লোকসান হতো। তাই বিরিয়ানি বিক্রিতে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করেন আবির। চালু করেন ফেরি করে বিরিয়ানি বিক্রি। ফোন পেলেই ক্রেতার দুয়ারে তিনি উপস্থিত বিরিয়ানির হাঁড়ি নিয়ে। এখন প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ প্যাকেট বিরিয়ানি বিক্রি করছেন তিনি। একটি সাইকেল দিয়ে শুরু করলেও এখন দুটি সাইকেল এবং একটি মোটরসাইকেলে বিরিয়ানি নিয়ে ঘুরছেন যশোর শহরে।