
উদ্বোধনের অপেক্ষায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গ্যালারি
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার নিভৃত পল্লীতে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন মাতৃৃৃক্রোড়ে যে শিশু প্রথম চোখ মেলেছিল, পরবর্তীকালে সে শিশুর পরিচিতি দেশের সীমানা পেরিয়ে পরিব্যাপ্ত হয়েছে বিশ্বব্যাপী। মা-বাবার আদরের ‘খোকা’, রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের সুপ্রিয় ‘মুজিব ভাই’, সমসাময়িকদের প্রিয় ‘শেখ সাহেব’ থেকে মুক্তিকামী বাঙালির ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে অর্জন করেন ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি, শেষত কায়েমি স্বার্থবাদীদের প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে হয়ে ওঠেন জাতির অবিসংবাদিত নেতা ‘জাতির পিতা’, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’। বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের সঙ্গে তার নাম একাকার হয়েছে। এ তো শুধু একটি নাম নয়, বাঙালির জাতীয় মুক্তির ইতিহাস। সেই ইতিহাস এখন শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নামে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইন্সে সাজানো একটি গ্যালারিতে।
১২শ’ বর্গফুট আয়তনের দৃষ্টিনন্দন কক্ষটিতে শোভা পাচ্ছে ৮ টি কংক্রিটের ওয়াল, ৩টি স্ট্রিং ওয়াল, ৩টি বোর্ড ওয়াল ও ২ টি স্মৃতিস্মারক। এখানে রয়েছে ১৯৪৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নানান ঘটনাবলীর ৩০০টি ছবি, বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, উন্নয়ন ও সোনার বাংলা। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনী, রাষ্ট্রীয় স্মারক, মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত ৩০৩ রাইফেল, হ্যান্ড গ্রেনেড, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে একাত্তরের ২৫ মার্চে ব্যবহৃত বেতার বার্তা প্রেরণ যন্ত্র প্রভৃতি। বঙ্গবন্ধু ও বহির্বিশ্ব, ৭ মার্চের ভাষণ ও স্বীকৃতি, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা, থমকে যাওয়া উন্নয়ন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের অবদান এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার কথা। যা দেখতে বা জানতে আসছে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীসহ নানান পেশার মানুষ। এমন উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছেন পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুনকে।
গ্যালারি দেখতে আসা চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্র সাকিব বিশ্বাস, ছাত্রী তাসফিয়া তাবাসসুম, সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের ছাত্রী রিংকি ইসলাম ও জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে বড় হতে চাই। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আধুনিক ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে ভূমিকা রাখব।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের ঋণ, মা- বোনেরদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের এ অর্জিত স্বাধীনতা। এর পেছনে রয়েছে জাতির পিতার কর্মকান্ড, এ জাতির পিতা আমাদেরকে বাঙালি দিয়েছেন, আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন। তার ডাকে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এটিকেই মূলত পরিচয় করিয়ে দেওয়ায় টানা ৪ মাস কর্মযজ্ঞে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গ্যালারি।
তিনি আরও বলেন, উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গ্যালারিটি দ্রুত সকলের জন্য উন্মুক্ত করার মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশবাসী বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবে।