ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

পালাগানের শতবর্ষী শিল্পী দম্পতির মানবেতর জীবন

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার, বগুড়া

প্রকাশিত: ০০:২১, ৯ ডিসেম্বর ২০২২

পালাগানের শতবর্ষী শিল্পী দম্পতির মানবেতর জীবন

কায়সার আলী ও সুফিয়া বয়াতি

পালাগানে সুখ্যাতি অর্জন করা দুই দশকের সারা জাগানো জনপ্রিয় শিল্পী প্রতিবন্ধী কায়সার আলী ও সুফিয়া বয়াতি দম্পতি বর্তমানে আর্থিক সংকটে কুড়েঘরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পশ্চিম ঢাকা রোডে সওজের জায়গায় একটি কুড়েঘরে বসবাস করছেন খেয়ে না খেয়ে। ’৭০ থেকে ’৯০ দশক পর্যন্ত এই দম্পতি পাড়া-মহল্লা ও গ্রাম-গঞ্জে পালা গানের মাধ্যমে মাতিয়ে রাখত  শ্রোতাদের। সে সময় অত্রাঞ্চলে কায়সার-সুফিয়ার পালা গানের ক্যাসেট ছিল হটকেকের মতো।

সময় পরিবর্তনের সঙ্গে বিলুপ্ত হয় পালাগানের চাহিদা। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় বয়স। শারীরিক প্রতিবন্ধী কায়সার আলী বয়াতির বর্তমান বয়স ১১০ বছর। তার স্ত্রী সুফিয়া বয়াতির বয়স ৯৫ বছর। দুঃসময়ে এখন আর কেউ তাদের খবর রাখে না। অথচ এই দম্পতির সু-সময়ে অনেকেই ছিল তাদের পাশে। জানা গেছে, বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া পালাগানের সে সময়ের সারা জাগানো শিল্পী কায়সার আলী বয়াতি ১৯১২ সালে নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার পারইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

ছোটবেলা থেকে তিনি পালাগান চর্চা করতেন। এক পর্যায়ে এলাকায় শিল্পী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। নিজ এলাকা ছাড়াও দূর-দূরান্তের পাড়া-মহল্লা ও গ্রামগঞ্জে গানের জন্য হাঁক-ডাক আসতে শুরু হয়। তার গানের কারণে এলাকায় সুনাম ও সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। কায়সার আলী বয়াতি গ্রামের বাড়ি পারইলে থাকাকালে তিনি বিয়ে করেন। সংসার জীবনে চার সন্তান জন্ম নেয়। এরপর কায়সার আলী বয়াতি ভাল দল গঠনের জন্য সুফিয়া নামের এক নারীকে তার পালা গানের দলে নেয়। এক পর্যায়ে সুফিয়াকে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর উপজেলার সান্তাহার পশ্চিম ঢাকা রোডে সড়ক জনপথের জায়গায় অস্থায়ী ঘর করে বসবাস শুরু করেন।

×