নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ॥ হবিগঞ্জ জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র সংস্কারের জন্য বরাদ্দ আসছে। সেই সাথে প্রথমে ৩০ শয্যা ও পরে এ কেন্দ্রটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হবে।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রহিম চৌধুরী।
এর আগে ১২ অক্টোবর দৈনিক জনকন্ঠে ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে কাজ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এ সংবাদটি স্বাস্থ্য অধিদফতরের দৃষ্টিগোচর হয়। প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা পায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এ প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালকের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। তিনি এ তথ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে প্রেরণ করেন। তার অনুমোদনক্রমে এ প্রস্তাব স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে পাঠানো হয়। এ প্রস্তাব পাশ হয়ে আসা মাত্র প্রথমে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংস্কার করা হবে। পরে শুরু হবে ৩০ শয্যার কাজ। একইভাবে ৫০ শয্যা হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৬৫ সালে ভবন নির্মাণ হওয়ার পর এ কেন্দ্রে সেবা শুরু হয়। শুরুতে ১০ শয্যায় মা ও শিশুর সেবা হয়ে আসছিল। পরবর্তীতে ভবনটি সম্প্রসারণ করা হয়। ১৯৯২ সালের ৩০ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয় সম্প্রসারিত ভবনের। ১৯৯৫ সাল থেকে নরমাল ডেলিভারির পাশাপাশি সিজার সেবাও শুরু হয়। সেই সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয় কিশোর-কিশোরীদের সেবা। বর্তমানে এ কেন্দ্র থেকে মা ও শিশুদের জন্য ১১ এবং পরিবার পরিকল্পনায় ৮ রকমের সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবনের অনেক জায়গাতেই ফাটল। দেয়াল ও ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে পড়ার চিহ্ন। ২য় তলার টয়লেটের ময়লা পানি নিচ তলার রোগীর রুমে এসে প্রবেশ করছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। রাস্তা থেকে নিচু হওয়ায় বর্ষায় পানিও জমছে। আর এ অবস্থার মধ্যেই রোগীদেরকে নিষ্ঠার সঙ্গে সেবা প্রদান করছেন কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এখানে সংস্কার ও নতুন ভবন হলে সকল সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হবিগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালকের গাড়ি থাকলেও চালক নেই। এ কারণে মাঠ পরিদর্শন করতে তার সমস্যা তৈরি হয়েছে। দ্রুত চালক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন বলে অনেকেই মতপ্রকাশ করেছেন।
কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. আকলিমা তাহেরী বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৭৫৬টি নরমাল ডেলিভারি ও ১০টি সিজার হয়েছে। এ ছাড়া মা ও শিশু এবং কিশোরী সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভবনের সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণের সংবাদটি পেয়েছি। অত্যন্ত ভাল লাগছে। মা ও শিশুর সেবায় বিরাট উপকারে আসবে।
হবিগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রহিম চৌধুরী বলেন, ভবনের সংস্কার ও নতুন ভবনের জন্য লিখিতভাবে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে জানিয়েছিলাম। প্রথমে সংস্কারের জন্য বরাদ্দ আসবে। পরে বরাদ্দ আসবে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য।