ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রধানমন্ত্রীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ॥ বি.চৌধুরী

প্রকাশিত: ০২:১০, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রধানমন্ত্রীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ॥  বি.চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রধানমন্ত্রীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ এমন মন্তব্য করে চার দলীয় জোট সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা খুবই কঠিন। গণতন্ত্রের জন্য বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন জরুরী বলেও মনে করেন বিএনপির অন্যতম এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। কুড়িল বিশ্বরোডে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিকল্পধারা সভাপতি বি চৌধুরী বলেন, দেশে আজ নির্বাচনের কথা উঠেছে। একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ এদুটিই আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনী আবহাওয়ায় আমরা দেখি বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রায় আড়াই কোটি টাকার একটি মামলায় জেল দয়া হয়েছে। এ মামলায় যে রায় দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে আমি কিছু বলবনা, এটি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। তবে এটি সত্য যে আদালত যদি নির্দেশনা দিতেন যে, একটি ট্রাস্ট গঠন করে সুদ সমেত পুরো টাকাটাই তাতে ব্যয় করা হোক, এতে আমি সন্তুষ্ট হতাম। এবিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্ধিতা, প্রতিযোগীতা থাকবে কিন্তু হিংসার রাজনীতি প্রহণযোগ্য নয়। আমি কখনো কাউকে ক্ষমা করিনা এটা বাহাদুরি হতে পারে কিন্তু এটা রাজনীতিতে সবসময় প্রযোজ্য নয়। কাজ্ইে ক্ষমা প্রদর্শন, সহনশীলতা ও সম্মানের রাজনীতি করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে ভবিষ্যতের রাজনীতি হবে ক্ষমতায় থাকলে সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় আর বিরোধীদলে হলে জেল, জুলুম ও হুলিয়া। এতে কখনো সুন্দর রাজনীতি হবেনা এবং ভালমানুষ রাজনীতিতে উৎসাহী হবেনা। বি. চৌধুরী বলেন, ভাষা দিবসের মূল কথা মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করা। মাতৃভাষা হল মায়ের পরেই, মায়ের ভাষা। মা-মাতৃভাষা-মাতৃভূমি এই তিনটার জন্য মানুষ জীবন দিতে পারে। পৃথিবীতে বাংলাদেশের মানুষই ভাষার জন্য প্রথম আতœত্যাগকারী। মাতৃভাষার পরেই মাতৃভূমির কথা আসে। মাতৃভূমির জন্য আমাদের যে যুদ্ধ এর মূল প্রেরণা ছিল ভাষা আব্দোলন। এটাই পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে পরিণত হয়। নিজেদের মাতৃভাষাকে যেভাবে প্রতিষ্টা করার কথা ছিল তা আমরা পারিনি। তিনি বলেন, চতুর্দিকে বানান ভুল, উচ্চারণ ভুল। এখনো বিচারকরা বলেন তারা বাংলায় লিথতে পারেন না, বিচার যদি মানুষের দোর গোড়ায় পৌছাতে হয় অবশ্যই বাংলাভাষায় রায় লেথা উচিত। তিনি আরও বলেন, বিচারকদের এ বিষয়ে গবেষণা করা উচিত। ডাক্তাররা আগের চেয়ে ভাল হয়েছে একথা উল্লেখ করে বি চৌধুরী বলেন, তারা এথন বাংলায় প্রেসক্রিপশান লিখে, এটা আমিই প্রথম প্রচলন করি আর এর জন্য আমাকে কবিরাজ ও বলা হত। তিনি বলেন, আত্মত্যাগের মাধ্যমে যে দেশ পেলাম তাকে কি আমরা কাঙ্খিত পর্যায়ে আদৌ নিয়ে যেতে পেরেছি কি ? এই প্রশ্ন বার বার উঠে। দেখা যাচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কারণে মেধাবীদের সাথে অমনোযোগী ছাত্রের ব্যবধান থাকছেনা। এর ফলে অন্তত দেড় কোটি ছাত্রের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর জবাব কে দেবে ? তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেহেতু শিক্ষামন্ত্রী বা সচিব প্রশ্ন ফাঁস করেননা সেহেতু তাদের দোষ নেই। আর্থিক কেলেংকারির দায়ও অর্থমন্ত্রীর নয়। একথাগুলো আসলে সঠিক না। আপনি আজ থেকে এই মন্ত্রণালযের দায়িত্বপ্রাপ্ত একথা বলেই আমাদের মন্ত্রীদের দায়িত্ব দেয়া হয়। সুতরাং মন্ত্রণালযের যাকিছু সাফল্য তার তার কৃতিত্ব যমন তেমনি ব্যর্থতারও দায়ভার বহন করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে একটি সড়ক বা সেতু তৈরিতে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এর অর্ধেকেই তা সম্পন্ন হয়। এসব দেখে মনে দুঃখ হয়। গুলো যদি দুর্নীতি না হয় তবে অবশ্যই তা অযোগ্যতা। দুর্নীতি বা অযোগ্যতা যাই বলিনা কেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই এর দায়ভার নিতে হবে। আমরা আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন। সভায় অনান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, মঞ্জুর মোরশেদ, যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আলহাজ্ব অহিদউদ্দিন, ওয়াসিমুল ইসলাম, জানে আলম হাওলাদার,আসাদুজ্জামান বাচ্চু, মো. শাহ আলম, রাকিব হাসনাত, জান্নাতুল ফেরদৌস প্রমুখ।
×