ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এখন সিরিজ জয়ের স্বপ্ন টাইগারদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৭ মার্চ ২০১৭

এখন সিরিজ জয়ের স্বপ্ন টাইগারদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাত্র তিন টেস্ট খেলুড়ে দল বাকি। সব দলের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে সিরিজ জেতা হয়নি অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বাকি ৬ টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষেই ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ দল। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে টাইগাররা। কারণ, তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেই ৯০ রানের বড় ব্যবধানে স্বাগতিক লঙ্কানদের বিধ্বস্ত করেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে। সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে এগিয়ে থাকা মানেই সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাওয়া। সেই অবস্থানে এই প্রথম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আছে মাশরাফির দল। আর এ কারণেই সিরিজ জয়ের স্বপ্ন এখন আরও শক্ত ভিত পেয়ে গেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের ঐতিহাসিক শততম টেস্টে জয়ের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে বাংলাদেশ দল। আর ওয়ানডে ক্রিকেটে বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এর প্রমাণ ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে বেশ ভালভাবেই দিয়েছে। ঘরের মাটিতে একেবারেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা দলটি সিরিজ জিতেছে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে। এরও আগে নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ জয় হয়নি। আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজই তেমন খেলা হয়নি বাংলাদেশের। মাত্র তিনটি সিরিজ খেলেছে, যার সর্বশেষটি ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর। বাংলাদেশ দল নিজেদের অন্যতম শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ২০১৫ সালে মাশরাফির নেতৃত্বে। বিশ্বকাপের পর দেশের মাটিতে টানা ৫ ওয়ানডে সিরিজ জয় করে। বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালও খেলে। ওই বিশ্বকাপের আগেই ২০১৪ সালের ডিসেম্বর জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে আরেকটি সিরিজ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ দল। টানা ৬ সিরিজ জয়ের কারণে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের ৭ নম্বরে উঠে আসেন মাশরাফিরা। তবে হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে দীর্ঘ বিরতির পর গত বছর অক্টোবর-নবেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নেমে। ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় সিরিজ। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে ডিসেম্বরে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়। এ কারণে এবার শ্রীলঙ্কা সফরে খুব বেশি আস্থা রাখা সম্ভব হচ্ছিল না সিরিজ জয়ে। কারণ, নতুন করে গুছিয়ে উঠতে থাকা লঙ্কান দলটির সীমিত ওভারের ক্রিকেটে শক্তিমত্তায় তেমন ভাটা পড়েনি। আর দেশের মাটিতে তারা বরাবরই শক্তিধর। যদি সর্বশেষ হোমসিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে তারা ৪-১ ব্যবধানে। মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল নিজেদের ইতিহাসে সেরা সময় কাটাচ্ছে। ডাম্বুলার ওয়ানডে জয় ছিল তার অধীনে বাংলাদেশের ২৪তম জয়। যখন সাকিব আল হাসান অধিনায়ক ছিলেন, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ৪৯ ম্যাচে ২৩। আর মাশরাফি জয় আনার দিক থেকে তাকে ছাড়িয়ে গেছেন ৩৮ ম্যাচেই। অবশ্য ৬৯ ওয়ানডেতে হাবিবুল বাশার অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশকে ২৯ জয় পাইয়ে দিয়েছেন। সেদিক থেকে এখনও হাবিবুল সবার ওপরে। কিন্তু সাফল্যের হার বিবেচনায় আসলে মাশরাফির ধারে কাছে নেই আর কোন বাংলাদেশী অধিনায়ক। মাশরাফির সাফল্যের হার ৬৩.১৫ শতাংশ। ৪৬.৯৩ শতাংশ সাফল্য নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। আর সর্বাধিক সিরিজও মাশরাফির অধীনেই জিতেছে বাংলাদেশ। এবার আরেকটি সাফল্য আনার সুযোগ ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত এ তারকার। সার্বিক পরিস্থিতি যেমনই হোক এবার লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বপ্নটা শুরু থেকেই ছিল। সেই স্বপ্ন পূরণের পথটা আরও প্রশস্ত হয়েছে প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ের পর। মাশরাফিবাহিনীর কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে লঙ্কানরা। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬ সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ দল। যার মধ্যে ৫ সিরিজই জিতেছে শ্রীলঙ্কা এবং একটি সিরিজ হয়েছে ড্র। ড্র সিরিজটি সর্বশেষবার শ্রীলঙ্কা সফরে ২০১৩ সালে হয়েছিল। তবে ওই সিরিজের পরই বাংলাদেশ সফরে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে এসে বাংলাদেশকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে লঙ্কানরা। কিন্তু এবারই মোক্ষম সুযোগ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতার। তাহলে ৭ টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতার স্বাদ নেবে বাংলাদেশ দল। আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে মাশরাফিদের। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘জয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে তিন ম্যাচ সিরিজে প্রথম ম্যাচের জয়টা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রায় পারফেক্ট ম্যাচ খেলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, যদি নিজেদের সেরাটা খেলতে পারি তাহলে আমাদের হারানো কঠিন। এই স্পিরিট ধরে রাখলে সিরিজ জয় আমাদেরই হবে।’
×