ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ মে ২০২৪, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

জয় পেয়েছে মোহামেডান ও প্রাইম ব্যাংক

প্রিমিয়ার ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২৭, ১ মে ২০২৪

প্রিমিয়ার ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

ম্যাচসেরা আবাহনীর মোসাদ্দেক হোসেন

শিরোপা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, শুধু আনুষ্ঠানিকতার বাকি ছিল। সেই আনুষ্ঠানিকতা মঙ্গলবার সুপার লিগ পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে সেরেছে আবাহনী লিমিটেড। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই। এদিন বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে টানটান উত্তেজনার ম্যাচে শেষ ওভারে গিয়ে এক বল বাকি থাকতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে আবাহনী। ফলে ১৪ ম্যাচে একটানা জিতে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা অক্ষুণœ রাখল গতবারের শিরোপাধারীরা। 
এটি তাদের ২৩তম লিগ শিরোপা আর লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর পঞ্চম ট্রফি। ক্ষীণ আশায় লড়াইয়ে থাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব অবশ্য এদিন বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ৮ রানে হারিয়ে দিলেও আর আবাহনীকে ছুতে পারবে না। এখন তাদের পয়েন্ট ২২, বাকি দুই ম্যাচ জিতলেও তাদের পয়েন্ট হবে ২৬। এখন রানার্সআপ হওয়ার লড়াই মোহামেডানের। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সেই লড়াইয়ে এখনো টিকে আছে শেখ জামাল ও শাইনপুকুর। দিনের অপর ম্যাচে ফতুল্লায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে। 
আবাহনী প্রাথমিক রাউন্ড শেষ হতেই বেশ এগিয়ে ছিল। সুপার লিগ পর্বে টানা দুই ম্যাচ জেতার পর শিরোপার হাত ছোঁয়া দূরত্বে চলে যায় তারা। শেখ জামাল ও শাইনপুকুর একটি করে ম্যাচ হেরে শিরোপা দখলে আবাহনীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে শুধু মোহামেডানই বাকি ছিল। এ কারণে সুপার লিগ পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে মঙ্গলবার নজর ছিল সবার। বিকেএসপির দুই মাঠে ভিন্ন ভিন্ন ম্যাচে নামে আবাহনী ও মোহামেডান।

আবাহনী জিতলে আর কোনো সুযোগই নেই, হারতে হবে তাদের। এমন সমীকরণ সামনে রেখে আবাহনীর বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬৭ রান তোলে শেখ জামাল। এদিন সাকিব আল হাসান নামেন ম্যাচ খেলতে এবং পাঁচে নেমে ৫৬ বলে ২ চার, ৩ ছক্কায় করেন ৪৯ রান। ৯ নম্বরে নেমে জিয়াউর রহমান মাত্র ৫৮ বলে ৬ চার ও ৮ ছক্কায় ৮৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেললে লড়াকু সংগ্রহ পায় শেখ জামাল। সিলেটে জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলানোর জন্য তানভীর ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও আফিফ হোসেন ধ্রুবকে এনে সুফল পেয়েছে আবাহনী।

তানজিম ৩ উইকেট নিয়েছেন, বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানও তাই। জবাবে শুরুতে রান তুলতে বেশ সংগ্রাম করেছে আবাহনী, ১৫.৩ ওভারে ৬০ রানে ২ উইকেটে হারিয়েছে। এরপর এনামুল হক বিজয় ও আফিফ তৃতীয় উইকেটে ১০৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন।
বিজয় ৮০ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৬৭ রানে সাজঘরে ফেরেন। কিন্তু আফিফ অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন। আফিফ ৮৮ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ৮৩ রানে আউট হন। তবে মোসাদ্দেক ৫৪ বলে ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৫৩ রান করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। শেষ ওভারে ৯ রানের প্রয়োজন থাকলেও ৫ বলে ১৪ রান তুলে নেয় আবাহনী। ৪৯.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ২৭৩ রান তুলে শিরোপাা নিশ্চিত করা জয় পায় তারা।

শফিকুল ইসলাম নেন ২ উইকেট। আরেক মাঠে মোহামেডান ৪৯.৫ ওভারে ২৫৫ রানে গুটিয়ে যায়। মেহেদি হাসান মিরাজ ৭৮ বলে ৬ চারে ৫৮ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৬৯ বলে ১ চার, ২ ছয়ে ৫৬ রান করেন। আরিফুল হক ৩৩ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৪১ রান করেন। আরাফাত সিিন ৩টি, নাহিদ রানা ও নাঈম আহমেদ দুটি করে উইকেট নেন। জবাবে শাইনপুকুর ২ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৯.৪ ওভারে ২৪৭ রানে থেমে যায়। মার্শাল আইয়ুব ৭২ বলে ৯ চারে ৭০ ও আকবর আলী ৬৭ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে ৬১ রান করেন।

আবু হায়দার রনি ৪টি ও মুশফিক হাসান ৩টি উইকেট নেন। ৮ রানে জেতে মোহামেডান। ফতুল্লায় ৪১.৩ ওভারে ১৮১ রানে গুটিয়ে যায় গাজী গ্রুপ। আব্দুল গাফফার সাকলাইন ৩৯ ও মইন খান অপরাজিত ৩৬ রান করেন। হাসান মাহমুদ ও রেজাউর রহমান রাজা ৩টি করে উইকেট নেন। জবাবে ৩১.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮৬ রান তুলে ৭ উইকেটের বড় জয় পায় প্রাইম ব্যাংক। তামিম ইকবাল ৭৪ বলে ১০ চার, ২ ছক্কায় ৭৬ ও মুশফিকুর রহিম ৫৫ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় অপরাজিত ৫৯ রান করেন।

×