ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

লঙ্কানরা যেখানে আন্ডারডগ

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬

লঙ্কানরা যেখানে আন্ডারডগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজ মহাদেশের বাইরে গেলেই এশিয়ার দলগুলো কেমন চুপসে যায়! সেপ্টেম্বরে ঘরের মাটিতে প্রতাপের সঙ্গে শক্তিধর অস্ট্রেলিয়াকে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করে শ্রীলঙ্কা। কোথায় তারুণ্যনির্ভর দলটিকে নিয়ে স্তুতি হবে, উল্টো তিন মাসের ব্যবধানে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পরিষ্কার ‘আন্ডারডগ’ এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের দল! কারণ অতীত পরিসংখ্যান। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার গতিময় কন্ডিশনে তাদের ইতিহাস সুখকর নয়। বিপরীতে সদ্যই অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অসিদের নাস্তানাবুদ করে এসেছে প্রোটিয়ারা। সোমবার সেন্ট জর্জেসে ‘বক্সিং ডে’ টেস্ট দিয়ে শুরু দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা তিন ম্যাচের সিরিজ। স্বাগতিক বোলিং পেস আক্রমণনির্ভর। পোর্ট এলিজাবেথের সনাতনী ধীর গতির পিচেও যাতে কাইল এ্যাবট-ভারনন ফিল্যান্ডার-কাগিসো রাবাদারা সফল হন, সেটি নিশ্চিত করাই প্রোটিয়াদের প্রথম কাজ। ইনজুরির কারণে দুই বড় তারকা ডেল স্টেইন ও মরনে মরকেল না থাকলেও অপর তিন পেসার ভারনন ফিল্যান্ডার, কাগিসো রাবাদা ও কাইল এ্যাবটের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে গর্ব করতেই পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ, যারা এশিয়ার বাইরে নিজেদের মানিয়ে নিতে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়বে, সেটা অনুমেয়। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যান্য টেস্ট ভেন্যুর তুলনায় সেন্ট জর্জেসের পিচ অপেক্ষাকৃত কম পেস ও বাউন্স সহায়ক। ১৯৯২ সালে টেস্ট ভেন্যু হিসেবে অগ্রযাত্রার পর এ পর্যন্ত এখানে ৬টি টেস্টে জয়ী হয়েছে প্রোটিয়ারা। বাকি চারটিতে পরাজয় ও চারটি ড্র। তবে সফরকারি লঙ্কান অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গানা হেরাথকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানরা কিছুটা ভীত হতেই পারে। ২০১১/১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাসের একমাত্র টেস্ট জয়ের ম্যাচটিতে ম্যাচ সেরা হেরাথ নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। এদিকে চলতি বছর তিনজন ভিন্ন ভিন্ন অধিনায়কের অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অভিজ্ঞতা বেশ সফলই বলা চলে। হাশিম আমলার অধীনে বছরের শুরুর অভিজ্ঞতাটা অবশ্যই মোটেই সুখকর ছিল না। হোম সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পরে আমলা অধিনায়কত্ব থেকে সড়ে দাঁড়ান। এরপর ভারত সফরে ৩-০তে বিধ্বস্ত হয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান হারায় প্রোটিয়ারা। মে মাসে পুনরায় রেটিং পয়েন্ট বণ্টনের পরে দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থান নেমে আসে সাতে! ইংল্যান্ড সিরিজেই তারকা ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সকে অধিনায়ক মনোনীত করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনের কনুইয়ের ইনজুরিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ্যাওয়ে সিরিজে তিনি খেলতে পারেননি। দুটি টেস্টেই ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ফাফ ডুপ্লেসিসের অধীনে জয়ী হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। উঠে আসে চতুর্থ স্থানে। সম্প্রতি স্বেচ্ছায় নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান ডি ভিলিয়ার্স। এই সিরিজ দিয়ে তাই স্থায়ীভাবে প্রোটিয়া ক্রিকেটে শুরু হচ্ছে ডুপ্লেসিস-যুগ। পুরোপুরি ফিট নন বলে ডি ভিলিয়ার্স এই সিরিজে টেস্টেও নিশ্চিত নন। নতুন বছরে, জানুয়ারির শেষের দিকে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডেতে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণেই তিনি অধিনায়কের পদ থেকে সড়ে দাঁড়িয়ে স্কুলবন্ধু ডুপ্লেসিসকেই এই পদের জন্য সুপারিশ করেন। প্রোটিয়া কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেন ‘ছেলেরা পোর্ট এলিজাবেথে খেলতে পছন্দ করে। এখানকার উইকেটই আমাদের সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায়। এটা এমন একটি উইকেট যেখানে রানের জন্য ধৈর্য ধরতে হয়ত।’
×