ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

দলের ওপর দারুণ আস্থা ক্রুইফের

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩০ মে ২০১৬

দলের ওপর দারুণ আস্থা ক্রুইফের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ চেনা দলটাকে নিয়েই এবার নতুন চ্যালেঞ্জ। গত বছরও বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শুরুর দিকে মামুনুল ইসলামদের নিয়ে চেষ্টা করে গেছেন লোডভিক ডি ক্রুইফ। তবে তিনি চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে জাতীয় দলকে নিয়ে অনেকেই নৈপুণ্যের উন্নতি ঘটাতে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। সবই ব্যর্থ হয়েছে। আবারও ফিরেছেন ক্রুইফ। আপাতত একমাসের স্বল্পকালীন দায়িত্বে প্রথম মিশনটাই কঠিন তার জন্য। দলকে নিয়ে রবিবার সকালে তাজিকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তিনি। সেখানে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (২ জুন) এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের এ্যাওয়ে ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যাওয়ার আগে দলকে ইতিবাচক ফলাফল এনে দেয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন ক্রুইফ। ডাচ এ কোচ পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন এটা তাজিকিস্তান বেড়াতে যাওয়ার বিষয় নয়, বরং পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্যই যাচ্ছেন তিনি। আর দল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এবার তাজিকিস্তানে খেলোয়াড়রা নিজেদের শতভাগ উজাড় করে খেলে ভাল কিছু করবে এমন আত্মবিশ্বাস আগেই জানিয়েছেন ক্রুইফ। গত বছর নবেম্বরে তাজিকিস্তান সফরের স্মৃতিটা একেবারেই দুঃসহ মামুনুলদের কাছে। জুনে তাজিকদের বিরুদ্ধে হোম ম্যাচে (১৬ জুন) ১-১ গোলে ড্র করলেও এ্যাওয়ে ম্যাচে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। এ দুটি ম্যাচেই দলের সঙ্গে ছিলেন না ক্রুইফ। কিন্তু তিনি মনেপ্রাণে চাইছেন বড় পরাজয়ের কথাটা যেন বেমালুম ভুলে যায় ফুটবলাররা। এরচেয়ে ১-১ গোলে ড্রয়ের স্মৃতিটাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিলেই দলের জন্য ভাল হবে বলে মনে করেন ক্রুইফ। এ বিষয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সবার চিন্তা-ভাবনায় হয়তো থাকবে ৫-০ গোলের হারটা। কিন্তু আমার মাথায় আছে ১-১ গোলে ড্রয়ের বিষয়টা। ছেলেদের মাথাতেও সেটাই ভালভাবে দেয়ার চেষ্টা করেছি। তারা দেশের জন্য নিজেদের শতভাগ দিয়ে সম্মান বয়ে আনবে বলেই আমার বিশ্বাস।’ ১১ মে থেকে জাতীয় দল অনুশীলন শুরু করলেও ১৮ মে দলের সঙ্গে যোগ দেন ক্রুইফ। এরপর তিনি দলকে দেখেছেন সপ্তাহ খানেক। নিজের পরিকল্পনা অনুসারে গুছিয়েছেন এবং সবাইকে সেভাবেই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তবে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলে তেমন ভাল কিছু করতে পারেনি জাতীয় দল। শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করেছে জাতীয় দল। কিন্তু তবু আশাবাদী ক্রুইফ বলেন, ‘যখন এসেছিলাম বেশকিছু অসামাঞ্জস্য চোখে পড়েছে। কঠোর অনুশীলন করিয়েছি দলকে এরপর। রাসেলের বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। তাজিকিস্তান কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের হোম গ্রাউন্ডে খেলা তাই কৌশলগত কিছু পরিকল্পনা নিয়ে যাচ্ছি আমরা।’ সাউথ এশিয়ান গেমসেও জাতীয় দল তেমন ভাল করতে পারেনি। এমনকি দেশীয় কোচ শফিকুল ইসলাম মানিককে দিয়েও চেষ্টা করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ক্রুইফ ফিরেছেন। ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরতে থাকা দলটি এবার কতটা ভাল করতে সক্ষম হবে। মাত্র এক সপ্তাহ সময়ে নিজের মতো করে কতটা গুছিয়ে নিতে পেরেছেন ক্রুইফ? তবে এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন এ ডাচ কোচ। তিনি বলেন, ‘তাজিকিস্তানে আমরা বেড়াতে যাচ্ছি না, যাচ্ছি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে। ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করেছে। ম্যাচটিকে সামনে রেখে তারা ভীষণ উদ্দীপ্ত। আশা করছি তারা ভাল করবে। এ ম্যাচের কিছুদিন পরেই আমাদের হোম ম্যাচ তাদের বিরুদ্ধে। সেখানে ইতিবাচক কিছু করতে হলে তাজিকিস্তানে ভাল ফলাফল করা আমাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।’ ৭ জুন এই তাজিকদের বিরুদ্ধে ফিরতি ম্যাচে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এর আগে বৃহস্পতিবারের ম্যাচটির গুরুত্ব উপলব্ধি করে শিষ্যরা সেরা খেলাই উপহার দিবে বলে প্রত্যাশা করছেন ক্রুইফ। তিনি বলেন, ‘আমি ছেলেদের খুব ভাল করেই জানি। তারা ভাল ফলাফলের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। তাছাড়া এই ম্যাচের জন্য তারা তাদের শতভাগ দিতেও প্রস্তুত। তবে কাজটা সহজ না। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত তারা কতখানি ভাল করতে পারে।’
×