লঙ্কানদের মোকাবিলায় প্রস্তুত টাইগাররা

মাঠের ক্রিকেটে এমনিতেই সময়টা ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশের। ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ের কাছে টেস্ট হারের পর সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২-১  টি২০ সিরিজ হারের লজ্জায় পড়া দল পাকিস্তানে হোয়াইটওয়াশ হয় ৩-০ ব্যবধানে। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কায় পা রাখা টাইগারদের জন্য অস্বস্তি হয়ে এসেছে মেহেদি হাসান মিরাজের অসুস্থতা। জ্বরে পড়েছেন সদ্য ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া সময়ের সেরা এ অলরাউন্ডার।

গলে বৃষ্টিতে আগেরদিন নষ্ট হওয়ার পর রবিবার অনুশীলনে ঘাম ঝড়িয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এখানেই আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। মিরাজের জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন ফিল সিমন্স। উইকেট, কন্ডিশন দেখে একাদশ সাজাতে চান বাংলাদেশ কোচ। পেসার এবাদত হোসেন ফেরায় খুশি এ ক্যারিবিয়ানের বিশ্বাস লাল বলে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবেন স্পিডস্টার নাহিদ রানা।
‘মিরাজের জ্বর। তবে গত কয়েকদিনের চেয়ে  (শনিবার) সকালে ভালো দেখেছি ওকে। চিকিৎসা চলছে। আশা করি কাল (আজ) ও প্র?্যাকটিস করতে পারবে।’ বলছিলেন সিমন্স। মিরাজ ব্যাট ও বল দুই হাতেই দলের বড় শক্তি। তিনি না থাকা মানে দলের কম্বিনেশন ঠিক করতে সমস্যায় পড়তে হবে কোচকে,‘মিরাজকে নিয়ে সংশয় তো অবশ্যই দুশ্চিন্তার বিষয়। তবে একজনের অনুপস্থিতি মানে অন্য আরেকজনের জন্য সুযোগ। সবাই মন থেকে চাইছে মিরাজ সেরে উঠুক।

তবে এটাও জানে, সে যদি না খেলে আমাকে দায়িত্ব নিতে হবে। একটু দুশ্চিন্তা, তবে এই দুশ্চিন্তা থাকা ভালো!’ শ্রীলঙ্কা সিরিজে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে নাজমুল হোসেন শান্তকে- এই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েকদিন ধরেই। খোদ শান্তও দিয়েছিলেন এমন ইঙ্গিত। তবে বিষয়টা ফাঁস করতে চান না সিমন্স। শান্ত ওপেনিংয়ে নামবেন কিনা এই প্রশ্ন শুনেই বলে বসলেন, পরের প্রশ্ন? উইকেট ও কম্বিনেশন নিয়ে তিনি জানান,‘এখনও কম্বিনেশন কেমন হবে ঠিক করিনি। উইকেট দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। কাল উইকেট দেখে তবেই আমরা কম্বিনেশন নিয়ে ভাবব।

উইকেট দেখে মনে হচ্ছে খুব ভালো। কাল আবার দেখা বুঝতে পারব।’ দেশ ছাড়ার আগে মিরপুরে শান্তর সেদিনের সেই সংবাদ সম্মেলনের সময়ও তিনি ছিলেন টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক। তবে খানিক পরই মিরাজকে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করে বিসিবি। এতে শান্তর মতামতও নেওয়া হয়নি। 
বিষয়টি শান্তর খেলায় কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেই বিশ্বাস সিমন্সের,‘আমার মনে হয় না কোনো প্রভাব পড়বে। পিচে গিয়ে তার কাজ ক্রিকেট খেলা। অন্য সব ভাবনা খেলার পরে। তাই আমি মনে করি এটা তার ক্রিকেটে প্রভাব ফেলবে না।’ চোট কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরছেন এবাদত হোসেন। এমনকি জাতীয় দলের বাইরেও ছিলেন লম্বা সময় ধরে। অনুশীলনে তাকে খেলতে গলদঘর্ম হয়েছেন সতীর্থরাও।

সিমন্স কোচ হওয়ার পর এবাদত জাতীয় দলে এই প্রথম। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তিনি,‘খেলার সুযোগ পেলে এবাদত ভালো করবেন বলেই বিশ্বাস। তিনি বলেন,‘এবাদতকে দেখে বেশ ভালো মনে হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেছে। তাকে দলে ফিরে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। সুযোগ পেলে সে কেমন করে দেখতে মুখিয়ে আছি।’ নতুন পেস বোলিং কোচ এখন শন টেইট। ক্রমেই সমৃদ্ধ হচ্ছে জাতীয় দলের পেস বোলিং ইউনিট। এর অন্যতম দৃষ্টান্ত নাহিদ রানা। নাহিদকে নিয়ে সিমন্সও বেশ আশাবাদী। তার কাছে চাওয়া একটাই, নাহিদ যেন ক্রমেই উন্নতি করে যান।

আরও শাণিত হন টেইটের সান্নিধ্যে। সিমন্স বলেন, ‘আমি চাই সে যেন উন্নতি করতে থাকে, উন্নতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখে। সে অনেক তরুণ, আরও অনেক শেখার সুযোগ আছে। দলে এখন শন টেইটও আছে কোচ হিসেবে। নাহিদের জন্য যা উন্নতির দারুণ সুযোগ। তাই এটাই চাওয়া, নাহিদ আরও উন্নতি করুক।’ 
শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে ২০২৫-২৭ চক্রে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশ। দেশটির সঙ্গে টেস্টে অতীত রেকর্ড খুব একটা সুখকর নয়। ২৬ ম্যাচ খেলে জয় মাত্র ১টি। সেটি ২০১৭ সালে, কলম্বোয়।