ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

উৎসবের সাজে গহনা 

কারিমুন্নেছা হক

প্রকাশিত: ০১:৪১, ২৭ জুন ২০২৩

উৎসবের সাজে গহনা 

আকাশে কখনো শুভ্র মেঘের ভেলা

আকাশে কখনো শুভ্র মেঘের ভেলা। কখনো রৌদ্রের খরতাপেও বইছে হিমেল হাওয়া। প্রায়ই ঝুম বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে যায় তনুমন। সবকিছু ছাপিয়ে ছুটে চলা মানুষের ব্যস্ততা। তবুও মানুষ এখন বড্ড সচেতন। যেকোন উৎসবে প্রয়োজন হয় নতুন পোশাকের সঙ্গে মানানসই গহনা। মেয়েরা বরাবরই গহনা প্রিয়। এমন নারী খুঁজে পাওয়া ভার যার মধ্যে গহনার প্রতি দুর্বলতা নেই। তাদের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবেই অধিকাংশ বুটিকস হাউজে দেখা যায় এক্সেসরিজ কর্নার। সেখানে দেখা যায় চোখ ধাঁধানো নানা রকম গহনা।

তাই পোশাকের সঙ্গে টিনএজ মেয়ে ও নারীরা কিনছে বাহারি এক্সেসরিজ। আর বর্ষাকালীন এই গরমে ঢিলেঢালা ও হাল্কা রঙের পোশাকের সঙ্গে হাল্কা গহনা ও সাজ বেশ মানানসই। অনেক মেয়ের গহনার ঝক্কি পছন্দ নয় মোটেও, কিন্তু গুছিয়ে চলতে পছন্দ করেন। তাই সাজের অনুষঙ্গ বাছাই করতে কপালে ভাঁজ পড়ে। কিভাবে সাজলে ভাল লাগবে ও স্বস্তি পাবে তা নিয়ে দোটানায় থাকে। এক্ষেত্রে সকল চিন্তা ঝেড়ে ফেলে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন মনের মতো করে। যেহেতু বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ও শপিংমলে  সুতি কাপরেরর সঙ্গে সুতি, মেটাল, মাটি কিংবা বিডসের জুয়েলারি পাওয়া যায়। তাই পোশাকের সঙ্গে মানানসই গহনা পরুন। কেননা গহনা ছাড়া সাজ অপূর্ণ। এবার জেনে নেয়া যাক কোন্ পোশাকের সঙ্গে কেমন গহনা মানানসই। 
উৎসবের সাজে পোশাক যেমনই হোক না কেন, তার সঙ্গে মানানসই ট্র্যাডিশনাল গহনা পরলে বেশ মানায়। আধুনিক ও ট্র্যাডিশনাল গহনা মিশিয়ে পরলে বেশ স্টাইলিশ লুকও পাওয়া যায়। পার্টিতে যদি উজ্জ্বল রঙের, ঝলমলে গাউন বা লং ড্রেস পরেন, তবে চেষ্টা করুন হাল্কা গহনা পরতে। না হলে পোশাকের আভিজাত্যটা কমে যাবে। আবার কম কারুকাজের শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ পড়লে, কনট্রাস্ট রঙের জমকালো গহনা বাছুন। একই সঙ্গে ভারি নেকপিস, ব্রেসলেট, কানের দুল বা আংটি পড়তে পারেন। রংধনুরঙা গহনা বা একটু অন্য স্টাইলের গহনায় সাজলে ক্যাজুয়াল পোশাকেও হয়ে উঠবেন ফ্যাশন আইকন।

চেষ্টা করুন অল্প কারুকাজ করা হাল্কা গহনা পরতে। খুব চকচকে বা ঝলমলে গহনা এড়িয়ে চলুন। ব্রেসলেট হোক বা কানের দুল-সবটাই যেন হয় ছিমছাম। আর ক্যাজুয়াল পোশাকের সঙ্গে উজ্জ্বল রঙের গহনা পরুন পোশাকের সঙ্গে কনট্রাস্ট করে। গহনাতে ভেরিয়েশন আনতে স্বর্ণের পাশাপাশি গোল্ড প্লেটেড, মেটাল, স্টোন, পুঁতিসহ নানা ধরনের গহনা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন ট্রেন্ড। ফ্যাশনে এখন চোকার, লেয়ার নেকলেস, লহরী মালা, বিভিন্ন ধরনের কাটিং গহনা বেশ জনপ্রিয়।

এ ধরনের গহনা শাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন জমকালো পোশাকের সঙ্গে খুব সুন্দর মানায়। গহনার দোকানগুলোর দিকে তাকালেই এখন চোখে পড়বে রুপালি প্রলেপ দেয়া বিভিন্ন ধাতব গহনা যা বর্তমান ফ্যাশন ট্রেন্ডে খুবই জনপ্রিয়। কখনও সরাসরি রুপার ব্যবহার, কখনও আবার ধাতবের ওপর রুপালি রঙের প্লেটিং করে এসব গহনা তৈরি হচ্ছে। সিলভার কালার ছাড়াও অক্সিডাইস, এন্টিক কালারও খুব চলছে। নানা আকৃতির রুপালি বিডস, কাটাই কাজ আর মুক্তার ব্যবহারে এসব গহনা হয়ে উঠেছে শৈল্পিক। সিল্ক, মসলিন, কাতান শাড়ি ছাড়াও সারারা, লেহেঙ্গা, গাউনের সঙ্গে এ ধরনের গহনা বেশ মানাবে।
একটু ট্রেডিশনাল ধাঁচের গহনার প্রতি এখন আগ্রহটা বেশি। বিভিন্ন ধরনের গহনার মধ্যে চোকার এখন দারুণ জনপ্রিয়। জমকালো অনুষ্ঠানে চোকার, লম্বা চেইনের ভারি নেকলেস ভাল লাগে। একটু সিম্পল সাজপোশাকের সঙ্গে চার-পাঁচ লেয়ার নেকলেস পরলেই সাজে আসবে ভিন্নতা। তবে ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে গহনার রং যেন খুব বেশি উজ্জ্বল না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে গহনা পরতে চাইলে কাপড় অথবা মাটি দিয়ে তৈরি নান্দনিক গহনাও কিনতে পারেন। শাড়িতে গোল্ডেন বা তামাটে কাজ থাকলে এ্যান্টিক ধাঁচের গহনা মানাবে। সঙ্গে পরতে পারেন ম্যাচিং করা কানের দুল অথবা আধুনিক ডিজাইনের নান্দনিক যেকোন দুল। আজকাল বড় নাকফুল বেশ জনপ্রিয়। ধাতব বা রুপার তৈরি নথও পরছেন অনেকে। নাকফুল বড় পরলে তার সঙ্গে কান খালি রাখলে বা ছোট কানের দুল পরলে ভাল লাগবে। জমকালো সাজে এখন এক হাতে ব্রেসলেট, বালা বা বাউতির চল বেশি। অন্য হাতে থাকছে ঘড়ি বা আংটি। এক্ষেত্রে পাথর বসানো বালা বেছে নিতে পারেন। ফরমাল দাওয়াতে এক আঙ্গুলে শুধু বড় একটি আংটি ভাল লাগবে।
মৌচাক মার্কেট, বসুন্ধরা শপিং মল, যমুনা ফিউচার পার্ক, ইস্টার্ন প্লাজাসহ বিভিন্ন শপিংমলে পাওয়া যাবে নানা নকশার গহনা। বৈচিত্র্যময় ট্রেন্ডি গহনার খোঁজে যেতে পারেন বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে। এছাড়াও সিক্স ইয়ার্ডস স্টোরি, জাফরিন’স রুবি, জহরতসহ বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক দোকান থেকেও কিনে নিতে পারেন ভিন্ন ধারার গহনা। 

মডেল: ইসরাত
ছবি : তপু রেহমান
পোশাক:
বর্ণন

×