
ছবি: সংগৃহীত
গুগল তার ২ বিলিয়ন গুগল মেইল ব্যবহারকারীর জন্য জিমেইল প্ল্যাটফর্মে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ফিচার যুক্ত করছে, যা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল ডেটা সহ সব কন্টেন্টের ওপর ক্লাউড ভিত্তিক এআইয়ের প্রবেশাধিকার দেবে। তবে এই আপগ্রেড গোপনীয়তা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, কারণ জিমেইলের নতুন এআই ফিচারগুলো এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের সঙ্গে দ্বন্দ্বপূর্ণ।
সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের কাছে একটি বিভ্রান্তিকর ইমেইল পাঠানো হয়, যেখানে বলা হয় গুগলের ‘জেমিনি’ এআই মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপসহ ফোনের বিভিন্ন অ্যাপে প্রবেশ করবে, যদিও ইউজার ‘জেমিনি অ্যাপস অ্যাক্টিভিটি’ অফ করলেও তা কার্যকর থাকবে। এতে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
গুগল পরে জানায়, এই বার্তাটি বিভ্রান্তিকর ছিল। ‘জেমিনি অ্যাপস অ্যাক্টিভিটি’ বন্ধ থাকলেও জেমিনি ফোন কল দেওয়া, মেসেজ পাঠানো, টাইমার সেট করার মতো দৈনন্দিন কাজ করতে পারবে, তবে সেই চ্যাটগুলো রিভিউ বা এআই মডেল উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হবে না। এর আগে ব্যবহারকারীদের জেমিনি চালানোর জন্য অ্যাক্টিভিটি চালু রাখতে হতো, যার ফলে তথ্য সংরক্ষণ হতো, যা গোপনীয়তার জন্য সমস্যার কারণ ছিল। নতুন ব্যবস্থায় এই সমস্যা কিছুটা কমেছে।
তবে অ্যান্ড্রয়েডে ‘অ্যাক্টিভিটি অফ’ থাকলেও ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণ করা হয়, যা মাথায় রাখতে হবে।
গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ এখনও আছে। ২০২৫ সালের ৭ জুলাই থেকে ‘জেমিনি’ ফোন ও মেসেজ অ্যাপগুলোতে প্রবেশ করবে, যদিও ‘অ্যাক্টিভিটি অফ’ থাকলেও ডেটা এআই প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার হবে না—তবুও ব্যবহারকারীদের মধ্যে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষার প্রশ্ন জাগছে। কল লগ, প্রাইভেট মেসেজ ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের ওপর এআইয়ের প্রবেশাধিকার নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে।
এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপও সম্প্রতি ব্যবহারকারীদের মেসেজ থ্রেডের এআই সংক্ষিপ্তসার দিতে শুরু করেছে, যা সুবিধাজনক হলেও তথ্য ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্ন তোলে।
বিশেষ করে কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য গোপনীয়তা সচেতনতা কম হওয়ায় ঝুঁকি বেশি। গুগল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘জেমিনি’ চালুর পরিকল্পনা করছে, যা পাঠ পরিকল্পনা ও রিয়েল-টাইম ফিডব্যাক দেবে, কিন্তু এতে এআইয়ের দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষাগত প্রভাব ও গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
‘জেন এআই ও এলএলএম ডেটা প্রাইভেসি র্যাঙ্কিং’ রিপোর্টে ইনকগনি জানিয়েছে, যদিও এই এআই টুলগুলো উৎপাদনশীলতা বাড়ায়, অধিকাংশ ব্যবহারকারী এর জটিল গোপনীয়তা ঝুঁকি বুঝতে পারেন না। গুগল, মাইক্রোসফট ও অ্যাপল ব্যাপকভাবে অপারেটিং সিস্টেমে এআই অন্তর্ভুক্ত করায় অনুমোদনবিহীন তথ্য শেয়ার ও অপব্যবহারের ঝুঁকি বেড়েছে।
র্যাঙ্কিংয়ে গুগল প্রায় নিচের দিকেই, মেটা সর্বনিম্ন অবস্থানে, আর চ্যাটজিপিটি তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের কাছে তৃতীয় পক্ষের এআই পছন্দের কারণ।
এআই মডেলগুলি দৈনন্দিন কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হওয়ার ফলে গোপনীয়তা ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে এবং সাধারণ ব্যবহারকারীরা তা মানিয়ে নিতে পারছে না। গুগল শিক্ষা খাতে ‘জেমিনি’ চালুর সময় শিক্ষার্থীদের ডেটা এআই মডেল প্রশিক্ষণ বা মানুষের রিভিউয়ের জন্য ব্যবহার হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে।
আবির