
ছবি: সংগৃহীত
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে মেঘের মতো অদ্ভুত একটি কাঠামোর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, বায়ুমণ্ডলের স্পোরাডিক ই লেয়ার নামক স্তরে থাকা এই রহস্যজনক কাঠামো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তারা রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর হলো আয়নোস্ফিয়ার, যা প্রায় ৬০ থেকে ১০০০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই স্তরে থাকে চার্জযুক্ত কণা বা আয়ন। মাঝে মাঝে এসব কণা ঘনীভূত হয়ে তৈরি করে ঘনগুচ্ছ এটিই পরিচিত স্পোরাডিক ই লেয়ার নামে। এবার এই স্তরে মেঘের মতো অস্বাভাবিক কাঠামোর অস্তিত্ব ধরা পড়েছে, যা এর আগে এত স্পষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।
নাসা জানিয়েছে, “স্পোরাডিক ইলেক্ট্রোডাইনামিক্স” বা SEED (SpEED) নামের একটি বিশেষ মিশনের অধীনে এই রহস্য উন্মোচনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যেই মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের কোয়াজালিন অ্যাটল এলাকা থেকে একাধিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রবহনকারী সাব-অরবিটাল মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হবে।
বিজ্ঞানীরা জানান, স্পোরাডিক ই লেয়ারের কণা জমাট বেঁধে থাকায় আয়নোস্ফিয়ারের উপরের স্তরে পৌঁছানোর আগে রেডিও তরঙ্গ বারবার প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে পৃথিবীর রেডিও রিসিভারগুলোতে অস্বাভাবিক ও এলোমেলো সংকেত ধরা পড়ছে। এটি গবেষণা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
নাসার মিশন কর্মকর্তা আরোহ বরজাতিয়া বলেন, “স্পোরাডিক ই লেয়ার খালি চোখে দেখা যায় না। তবে রাডারের মাধ্যমে এটি প্যাঁচানো এবং ফোলা মেঘের মতো দেখতে। কখনো কখনো এটি ছড়িয়ে পড়ে পুরো আকাশে মেঘলা স্তরের মতো।”
গবেষকরা এই বিস্তৃত স্তরকে “Combulting Sporadic E-layer” নামেও অভিহিত করেন, যেটি রেডিও যোগাযোগে বারবার বিঘ্ন ঘটায়।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই অদ্ভুত কাঠামোর উৎস, গঠন প্রক্রিয়া এবং এর প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গেলে শুধু রেডিও যোগাযোগই নয়, মহাকাশে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আবহাওয়াবিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
ছামিয়া