
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান স্মার্টফোন দুনিয়ায় "আইফোন বনাম অ্যান্ড্রয়েড" বিতর্ক যেন শেষ হবার নয়। একদিকে অ্যাপলের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম আইওএস, অন্যদিকে গুগলের উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম অ্যান্ড্রয়েড। উভয় প্ল্যাটফর্মেরই শক্তিশালী ব্যবহারকারী রয়েছেন। তবে অনেক প্রযুক্তি বিশ্লেষকের মতে, কিছু নির্দিষ্ট দিক থেকে আইফোনের চেয়েও কার্যকর ও ব্যবহারবান্ধব অ্যান্ড্রয়েড ফোন।
চলুন দেখা যাক, ঠিক কোন পাঁচটি ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড এগিয়ে রয়েছে:
১. পরিপূর্ণ কাস্টমাইজেশন
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহারকারীরা নিজের পছন্দমতো হোম স্ক্রিন সাজাতে পারেন। ওয়ালপেপার, রঙ, আইকন, উইজেট, এমনকি স্ক্রিনের গ্রিডও নিজের ইচ্ছামতো বদলানো যায়। অনেক ফোনে স্ক্রিনের রেজুলেশনও ঠিক করা যায় ব্যাটারি সাশ্রয় বা উচ্চ পিক্সেলের ছবির জন্য।
অন্যদিকে, আইফোনে এই স্বাধীনতা সীমিত। সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাপল কিছু পরিবর্তন এনেছে, তবে এখনও অ্যান্ড্রয়েডের মতো মুক্তভাবে সাজানোর সুবিধা দেয় না।
২. পছন্দ অনুযায়ী ফোন বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা
অ্যান্ড্রয়েড একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হওয়ায় একাধিক ব্র্যান্ড ফোন তৈরি করে। স্যামসাং, গুগল, ওয়ানপ্লাস, আসুস, ইনফিনিক্স, টেকনো—প্রতিটি ফোনেই আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। কেউ দীর্ঘ সময় ধরে চার্য থাকবে এমন ফন চাইলে তারা নিতে পারেন আসুসের গেমিং ফোন। কম বাজেটের মধ্যে স্মার্টফোন চাইলে ২০ হাজার টাকার মধ্যেও শক্তিশালী অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস পাওয়া যায়।
অপরপক্ষে, আইফোনের দামই তুলনামূলক বেশি, এবং বিকল্পের সংখ্যা সীমিত।
৩. সহজ ও নির্ভরযোগ্য ‘ব্যাক’ বোতাম
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সাধারণভাবে স্ক্রিনের নিচে বা পাশে একটি ‘ব্যাক’ বোতাম থাকে, যা যেকোনো অ্যাপ বা সেটিংস থেকে আগের পর্দায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এটি সহজ, দ্রুত এবং অভ্যস্ত ব্যবহারকারীদের জন্য খুবই কার্যকর।
আইফোনে সাধারণত স্ক্রিনের বাঁ দিক থেকে ডানদিকে সোয়াইপ করতে হয় বা অ্যাপের নিজস্ব ব্যাক অপশন ব্যবহার করতে হয়, যা সব সময় একইভাবে কাজ নাও করতে পারে।
৪. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে অগ্রগামী অ্যান্ড্রয়েড
অ্যান্ড্রয়েডে গুগলের ‘জেমিনি’ নামক এআই সিস্টেম বর্তমানে ব্যবহারকারীদের ছবি তৈরি, লেখা তৈরি, বিষয় অনুসন্ধান, ক্যামেরায় বস্তুর পরিচয় দেওয়া ইত্যাদি কাজে সাহায্য করছে। ব্যবসায়ী বা গবেষকদের জন্য রয়েছে উন্নত ভার্সন 'জেমিনি অ্যাডভান্সড'।
অন্যদিকে, অ্যাপল এখনো সম্পূর্ণভাবে নিজের এআই ব্যবস্থা চালু করেনি। তারা কিছু ফিচার নিয়ে কাজ করছে, তবে বাজারে অ্যান্ড্রয়েড ইতিমধ্যেই এগিয়ে গেছে।
৫. উন্নত ফাইল ব্যবস্থাপনা
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে 'ফাইল ম্যানেজার' নামক আলাদা অ্যাপের মাধ্যমে যেকোনো ফাইল কপি, কাট, স্থানান্তর, মুছা, এমনকি ইউএসবি বা ব্লুটুথের মাধ্যমে পাঠানো যায়। ক্লাউডেও সহজে সংরক্ষণ করা যায়।
আইফোনে বেশিরভাগ ফাইল নির্দিষ্ট অ্যাপের মধ্যেই আটকে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ফাইল বের করে ব্যবহার করাটাও হয়ে পড়ে জটিল।
প্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন ফিচার ও পরিবর্তন প্রতিনিয়তই আসছে। তবে কাস্টমাইজেশন, দামে বৈচিত্র্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, এবং ব্যবহারযোগ্যতা বিবেচনায় অ্যান্ড্রয়েড অনেক ক্ষেত্রেই আইফোনকে ছাড়িয়ে গেছে—এমনটাই মত প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের।
মুমু