শহীদদের দলীয়করণ করলে তাদের অবমূল্যায়ন করা হবে: ডা. জাহিদ

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা.এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যেমন মুক্তিযোদ্ধাকে দলীয়করণ করেছিল, তেমনি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের যদি দলীয়করণ করেন, তাহলে তাদের অবমূল্যায়ন করা হবে। এই শহীদ জাতির জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।’

শনিবার (২১ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের উদ্দেশ্যে ডা. জাহিদ বলেন, ৫ আগষ্টের পর জনগণ আপনাদের দায়িত্বে বসিয়েছে দেশে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার জন্যে। যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন, বিচারালয়, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিবেন। জনগণের ক্ষমতা, জনগণের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দিবেন। জনগণ তার ইচ্ছা, অভিপ্রায় ভোটাধিকারের মাধ্যমে প্রকাশ করবেন।

শহীদদের দলীয়করণ করা হলে তাদের অপমান করা হবে মন্তব্য করে সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘৮ আগষ্ট আপনাদের দয়িত্ব দেওয়ার পর থেকে আজ ২১ জুন প্রায় ১০ মাস হতে চললো। কয়েকদিন পর বর্ষপূর্তি হবে। এই অবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে আমাদের জানতে ইচ্ছা হয়, আপনারা আবু সাঈদ, মুগ্ধ, অসীমের কথা বলেন। কিন্তু আমাদের সকল শহীদের কথা বার বার বলতে হবে। কিন্তু শহীদদের যদি আপনারা আওয়ামী লীগের মতো দলীয়করণ করেন, তাহলে শহীদদের অবমূল্যায়ন করা হবে।’

‘এই শহীদ জাতীর জন্য গণতন্ত্রের জন্য শহীদ। কিন্তু ইলিয়াস আলী, কমিশনার চৌধুরী আলমসহ ১৭ বছরের ইতিহাসকে ভুলে গেলে কোনো অবস্থাতে জুলাই-আগষ্টে পৌঁছতে পারবেন না। কারণ ৪৭ না হলে ৬৯ হতো না, ৬৯ না হলে ৭১ হতো না। ৭১ না হলে ৯০ হতো না, ৯০ না হলে ২৪ হতো কিনা বিরাট বড় প্রশ্ন থেকে যেতো। যার যা অবদান অবশ্যই আমাদের স্বীকার করতে হবে এবং তাদেরকে যথাযথ সম্মান দিতে হবে। এটা আমাদের দায়িত্ব।’

গত ১৩ তারিখে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আয়নায় আপনারা চেহারা দেখবেন। তারেক রহমান শুধু একজন মানুষ নয়। তারেক রহমান এদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রতীক।’

তিনি বলেন, তারেক রহমানের সাথে প্রধান উপদেষ্টা কথা বলবেন, কি বলবেন না-সেটা নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল বিব্রত করে তারা বলছে, জাতি বিব্রত। আমার প্রশ্ন, জাতির দায়িত্ব কি আপনারা নিয়েছেন? জাতির ১৮ কোটি মানুষের দায়িত্ব কি আপনারা নিয়েছেন? বলেন আপনাদের দল বিব্রত হয়েছে। মনে রাখবেন, সবসময় জাতিকে নিয়ে টান দিবেন না। তাহলে হিসাব-নিকাশ অন্য হতে পারে।’

‘তারেক-ইউনূস বৈঠকের পর এদেশে অনেক ধরনের বিশৃঙ্খলা কমে গেছে। শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসছে। মানুষের মনে একটা আশা জেগেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আবারও বলতে চাই, দ্রততম সময়ের মধ্যে জনগণের অধিকার জনগণকে ফেরত দেওয়ার মধ্যেই আগামীর বাংলাদেশ গড়ার শক্তি নিহিত আছে। কোন অবস্থাতেই এটিকে যদি প্রলম্বিত করার চেষ্টা করা হয়, আর বিএনপিকে নিয়ে যদি কথা বলা হয়, তাহলে মেনে নেওয়া হবে না।’

সংগঠনের আহ্বায়ক ও সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ আব্দুল আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।