
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি পতিত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি অনলাইন সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শিক্ষক ও সাংবাদিক শারমিন চৌধুরী। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত, সমালোচিত ওবায়দুল কাদের লম্বা সময় গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর বাংলাদেশি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়া শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন সফরে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের সাক্ষাতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ ঘটনায় এক বিবৃতিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।
সাংবাদিক শারমিন চৌধুরী পলাতক আওয়ামী নেতা ওবায়দুল কাদেরের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরে আমরা দেখলাম, টিউলিপ সিদ্দিক সাক্ষাৎ প্রত্যাশা করে ড. ইউনূসের কাছে একটা চিঠি লিখেছেন। যেখানে তিনি তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) বেশ প্রশংসা করছেন, তাঁর ঐতিহাসিক ভূমিকায় তিনি (টিউলিপ) অনুপ্রাণিত, জনকল্যাণে তাঁর ভূমিকার কথাও জানিয়েছেন। এরকম বেশ প্রশংসা করে একটা চিঠি লিখেছেন।’
শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘অন্যদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন যে, কেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ড. ইউনূসের সাথে দেখা করা উচিত না। তিনি (জয়) নানা কারণে নেতিবাচক ভূমিকা, আওয়ামী লীগকে নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন।’
এরপর শারমিন চৌধুরী ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন, ‘আমার কথা হচ্ছে যে, দুটি বিষয় সাংঘর্ষিক হয়ে গেল না?’
জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উনি (ড. ইউনূস) কি ইলেক্টেড গভমেন্ট? না ইলেক্টেড গভমেন্ট, না কনস্টিটিউশনাল গভমেন্ট। তাহলে এখানে সমালোচনা করে সজীব ওয়াজেদ জয় কী ভুল করেছে?’ এছাড়া, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর বিনা অপরাধে একটা শাস্তি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে’ দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।
সাংবাদিক শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার প্রশ্নটা হচ্ছে যে, পরিবারের দুই সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চাইছেন আর সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যেন তাঁকে সাক্ষাৎ না দেন সেজন্য বলছেন। মানে দুটি সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান।’
এরপর তিনি ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন, ‘জয় ও আপনারা বলছেন জঙ্গি, সুদখোর; ওদিকে টিউলিপ তাঁর (প্রধান উপদেষ্টার) ঐতিহাসিক ভূমিকায় অনুপ্রাণিত হচ্ছেন, তাঁর প্রশংসা করছেন, মানে কেমন হয়ে গেল বিষয়টা?’
জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেখুন, আমি তার চিঠিটা দেখিনি, পড়িওনি। কারো কাছে যেকোনো কিছু বলার, একটা চিঠি লেখার মধ্যেও ভদ্রতার ব্যাপার আছে। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একজন সদস্য। সেই হিসাবে তার নিজের একটা ভদ্রতার প্রশ্ন আছে, অপরের প্রতি সম্মানবোধের বিষয় আছে।’
‘ব্রিটিশ এমপি হিসেবে টিউলিপ ভদ্রতার পরিচয় দিচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশের সাবেক এমপি, মন্ত্রী হিসেবে ভদ্রতার প্রয়োজন নাই। তখন জঙ্গি, সুদখোর, খুনী বা যা খুশি এগুলো বলে ফেলা যায়। তখন আসলে ভদ্রতা-সভ্যতার সমস্যা হয় না?’ সাংবাদিক শারমিন চৌধুরী এমন প্রশ্ন করলে ওবায়দুল কাদের তাকে বলেন, আপনি তো এখন বায়াসড। আপনি প্রথম থেকেই বায়াসড (প্রভাবিত)। প্রথম থেকেই অ্যাটাক (আক্রমণাত্মক প্রশ্ন) শুরু করছেন।’
তখন সাংবাদিক শারমিন চৌধুরী ওবায়দুল কাদেরকে বলেন, ‘আমার প্রশ্নটা আপনার পছন্দ হয় নাই। আমি দুঃখিত প্রশ্ন পছন্দ না হবার জন্য।’
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=4pa7MSECIuk
রাকিব