ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিএনপির আনুষ্ঠানিক বাজেট প্রতিক্রিয়া

রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত ছাড়াই বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৪২, ৫ জুন ২০২৫

রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত ছাড়াই বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে দলের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত ছাড়া  সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বুধবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, এ বাজেট গতানুগতিক ও অংশগ্রহণহীন।
বাজেট প্রস্তাবের আগে সবার মতামত না নেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে আমীর খসরু বলেন, আমরা এক যুগান্তকারী নজির তৈরি করতে পারতাম। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সর্বক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছে। যেহেতু দেশে এখন সংসদ বা গণতান্ত্রিক কোনো সরকার নেই, তাই বিএনপি আশা করছেন অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন অর্থাৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য স্থাপনের মাধ্যমে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করবে। সরকার চাইলে রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতও নিতে পারত।

মতামতে অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রতিনিধিরাও অংশ নিতে পারতেন। কিন্তু সরকার তা করেনি। অথচ রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত নিলে বাজেট প্রণয়ন একমুখী, অংশগ্রহণহীন ও গতানুগতিক ধারার হতো না। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন চিন্তার প্রতিফলন হয়নি। একতরফাভাবে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। ফলে তা সমন্বিত অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক হতে পারেনি।
লিখিত বক্তব্যে আমীর খসরু বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এটিই প্রথম বাজেট। পতিত স্বৈরাচারী সরকার অর্থনীতিকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে রেখে গেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল ন্যায্য ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থা। জনগণের জীবনযাত্রার অগ্রাধিকার। এ কারণেই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক পরিকল্পনা। এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকেও গভীর তাৎপর্য বহন করে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯১ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থান দেশের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম। আর বার্ষিক বাজেট গণতন্ত্রের একটি মৌলিক স্তম্ভ। 
আমীর খসরু বলেন, প্রতিটি দফা যাচাই-বাছাই ও কাটছাঁট করে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ জনগণের মৌলিক অধিকারের আইনি কাঠামো প্রদান করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ‘ম্যাগনা কার্টা’ কর আরোপের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকে সীমিত করেছিল। যুক্তরাজ্যে ‘গৌরবময় বিপ্লব’ কর ও ব্যয়ের উপর সংসদের কর্তৃত্বকে সুদৃঢ় করেছিল। ‘প্রতিনিধিত্ব ছাড়া কর আরোপ নয়-এই স্লোগান আমেরিকান বিপ্লবের ভিত্তি।
আমীর খসরু বলেন, দেশের বর্তমান বিশেষ পরিস্থিতিতে বাজেটের আগে সংলাপ জরুরি ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করবে। অর্থাৎ ২০২৫-২৬ বাজেটীয় বছরে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে। ওয়েস্টমিনস্টার সিস্টেমের ঐতিহ্য অনুসরণকারী অনেক দেশেই অন্তর্বর্তী শাসন সংক্রান্ত রীতিনীতি আছে, যা বাংলাদেশে নেই। সাধারণ নির্বাচন আসন্ন হলে বা নতুন সরকারের সম্ভাবনা থাকলে বাজেট অনুমোদনের ভিন্ন পন্থা থাকে। অন্তর্বর্তী সরকার নীতি-কাঠামোর বড় ধরণের পরিবর্তন করে না।

উল্লেখযোগ্য কর সমন্বয় বা নতুন, বৃহৎ আকারের আর্থিক প্রতিশ্রুতিও দেয় না। রাজনৈতিক সংলাপ হলে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ব্যয় বরাদ্দে বাস্তবসম্মত পুনর্বিন্যাস হত। স্বৈরাচারী সরকারের সীমাহীন জন-বান্ধবহীন নীতি-কাঠামো উদ্ভূত দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ মূল্যস্ফীতিজনিত সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যয় নির্বাহের সংকট থেকে মুক্তির দিক নির্দেশনা থাকত। দারিদ্র বৃদ্ধির হারে লাগাম টানা যেত। 
আমীর খসরু বলেন, মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির নিচে থাকায় প্রকৃত আয় কমেছে। দারিদ্র্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ভোক্তা ব্যয়ের ওপরও চাপ সৃষ্টি করেছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ স্থবির হওয়ায় আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক প্রায় সব খাতেই কর্মসংস্থান কমেছে। ফলে সমাজে ভাঙ্গন ধরেছে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে। কৃষি উৎপাদন প্রবৃদ্ধি গত এক দশকের মধ্যে সর্বনি¤œ। খাদ্যনিরাপত্তা হুমকির মুখে। অপর্যাপ্ত, ত্রুটিপূর্ণ, দুর্নীতিগ্রস্ত সামাজিক সুরক্ষা খাতে পেনশন ও কৃষি ভর্তুকি অন্তর্ভুক্ত করে বরাদ্দ বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবে দেখানো হলেও সামাজিক সুরক্ষার জন্য সরকারি বরাদ্দ অপর্যাপ্ত থেকে যাচ্ছে। আজ অবধি সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচিগুলো অধিকারভিত্তিক হলো না।
আমীর খসরু বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, কলেজ ও স্কুলগুলোকে পূর্ণাঙ্গ কর মওকুফের আওতায় আনা যেত। এতে তরুণ সমাজের শিক্ষা-আকাঙ্খা পূরণ হত। সামাজিক সমতা ও মেধাভিত্তিক সমাজ নির্মাণে সহায়ক হত। শিক্ষার দুর্বল ফলাফল ও তরুণদের মধ্যে উচ্চশিক্ষা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণ না থাকার বিশাল হার ডেমগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বা জনমিতিক লভ্যাংশ অর্জনের পথে প্রতিবন্ধক। এসব খাতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ না হলে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসে অগ্রগতি সম্ভব নয়। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন দুরূহ হয়ে যাচ্ছে।
অর্থনৈতিক কাঠামোর দুর্বলতাগুলোর সমাধানে সুস্পষ্ট রূপরেখার প্রয়োজন ছিল উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পথনকশা উপস্থাপন। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে শিল্প কারখানা স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে অগ্রাধিকার দেওয়া। জরুরি ছিল ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি বিভিন্ন খাতে সহায়তার মাধ্যমে আরও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি। বিশাল সুদের হারের সঙ্গে অতিরিক্ত কর ও শুল্ক শিল্পে বড় চাপ সৃষ্টি করবে।

বিশেষ করে, উৎপাদনশীল খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কর্মসংস্থানও কমতে পারে। মধ্যম ও নি¤œবিত্ত শ্রেণির ওপর আর্থিক চাপ বাড়লে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে পারে। দারিদ্র্য বিমোচনের অগ্রগতিও থমকে যেতে পারে। ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় কমানো, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস এবং ‘কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস’ কমানোরও কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় উদ্যোক্তারা অনিশ্চিত ও প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হবেন।
আমীর খসরু বলেন, অনলাইন ব্যবসার ওপর শুল্ক বাড়ানো ডিজিটাল উদ্যোক্তারা চাপে পড়বেন। তরুণ উদ্যোক্তাদের হতাশা বাড়বে। উদ্ভাবনও নিরুৎসাহিত হবে। এই খাত নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ডিজিটাল রূপান্তরে বড় ভূমিকা রাখতে পারত। তিনি বলেন, আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতাও কাটেনি। পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীগণ অবহেলিতই থেকে গেলেন। ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা নাজুক। খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা এবং করজাল সম্প্রসারণের মত পদক্ষেপ নিলে রাজস্ব আহরণে নতুন ভিত্তি তৈরি হত।
আমীর খসরু বলেন, সরকার ব্যাংক খাতের ওপর বেশি নির্ভরশীল। ‘ঋণ করে ঋণ শোধ’ দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ কর ফাঁকি প্রদানকারীদের পুরস্কৃত করছে। নিয়মিত করদাতাদের প্রতি এটি অবিচার। করব্যবস্থার প্রতি আস্থা কমতে পারে। আয়কর স্লাবে কর হারের পরিবর্তন অধিকাংশ করদাতাদের ওপর আরও অভিঘাত ফেলবে। কর ফাঁকি ও জালিয়াতি রোধ এবং কর জাল সম্প্রসারণ না করে ভ্যাট বৃদ্ধির মাধ্যমে বরাবরের মত করের বোঝা সাধারণ জনগণের কাঁধে চাপানো হয়েছে। পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। জীবনযাত্রার মান কমছে।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে ১৮০ দিনের কর্মপরিকল্পনায় কি থাকবে সংবাদ সম্মেলনে তা জানান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে রাজনৈতিক দল নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম ১০০ দিনে কি কি কাজ করবে, তার পরিকল্পনা প্রকাশ করে থাকে। জনগণের ক্ষমতায়নের দল হিসেবে বিএনপি বাংলাদেশে এমন একটি বাস্তবসম্মত সংস্কৃতি প্রবর্তন করতে চায়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের পর প্রথম ১৮০ দিনের মধ্যে বিএনপির লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নির্বাচনের আগেই নির্ধারণ করা হবে। সেই সঙ্গে ছয় মাসের পরিকল্পনার ভিত্তিতে একটি অ্যাকশন-ওরিয়েন্টেড রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হবে। বিভিন্ন সেক্টরে বিএনপি কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, সেগুলোও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হবে।
আমীর খসরু বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এবং ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সকল শহীদের তালিকা প্রস্তুত করে নিজ নিজ এলাকায় তাদের নামে সরকারি স্থাপনার নামকরণ করা হবে। শহীদ পরিবারগুলোকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করা হবে। গণঅভ্যুত্থানে ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যেসব গণতন্ত্রকামী ব্যক্তি পঙ্গু হয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন তাদেরকেও স্বীকৃতি ও চাকরির সহায়তা প্রদান করা হবে।
আমীর খসরু বলেন, রোগ প্রতিরোধকে প্রাধান্য দিয়ে টিকাদান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সচেতনতা তৈরির একাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, স্যানিটেশন এবং পুষ্টির উপর জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য স্পেশালাইজড ট্রেনিং স্কিম শুরু করা হবে। নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য আধুনিক পরিশোধন ব্যবস্থা ও বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী রিজার্ভার তৈরি করা হবে। প্রান্তিক চার কোটি পরিবারের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ লক্ষ দরিদ্র গ্রামীণ পরিবারের জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করা হবে।

এই কার্ড মূলত পরিবারের নারী প্রধানের নামে ইস্যু করা হবে। তাদের প্রতিমাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা অথবা প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। বিচারিক প্রক্রিয়ায় ধর্ষক-নিপীড়কদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। নারীদের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে ডেডিকেটেড সাপোর্ট সেল প্রতিষ্ঠা করা হবে। নারীদের স্বনির্ভরতা বাড়াতে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে যোগ্যতার ভিত্তিতে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে।
আমীর খসরু বলেন, কৃষকের নামে জমির পরিমাণ ও খতিয়ানসহ প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত ‘ফার্মার্স কার্ড’ চালু করা হবে। কৃষকের কাছ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে রাষ্ট্র ন্যায্যমূল্যের ভিত্তিতে সরাসরি উৎপাদিত পণ্য ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং দেশব্যাপী কোল্ড স্টোরেজ তৈরির কাজ শুরু হবে। কৃষিজাত পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ, মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করে কৃষি খাতকে রপ্তানিমুখী গড়ে তোলা হবে। এলাকাভিত্তিক ডাটাবেস তৈরি করা হবে। কৃষকের জমির ও উৎপাদিত ফসলের পরিমানের তথ্য-উপাত্ত নির্ণয় করে টার্গেটেড পলিসি সাপোর্ট দেওয়া হবে।

শিক্ষা ও শিল্প খাতের উন্নয়ন করা হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নের জন্য দেশব্যাপী প্রোডাকশন ফেসিলিটি, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনিং প্রোগ্র্যাম হাতে নেওয়া হবে। তাঁরা আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সরবরাহকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পণ্য বিশ্বব্যাপী বিক্রি করতে সক্ষম হবেন। বাংলাদেশে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, ইত্যাদি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মের অফিস খোলার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ফ্রিল্যান্সার তরুণ-যুবকদের সুবিধার্থে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশে পেপাল এবং অন্য পেমেন্ট মেথডসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম শুরু করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্রবাসী শ্রমিকদের জীবন, মর্যাদা ও কর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

ধর্ষণ, ছিনতাই, রাহাজানি, চুরিসহ সকল নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের মাধ্যমে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে। যে কোনো মূল্যে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। কর্মসংস্থানমুখী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা হবে। ব্যাংকিং খাতকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য সহজীকরণ করা হবে। বাণিজ্য সহজীকরণ ও শুল্ক পদ্ধতি উন্নয়নের জন্য শুল্ক শ্রেণিবিন্যাস ডিজিটালাইজড করা হবে। এছাড়াও আরও যা যা প্রয়োজন তা করা হবে।  
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও বিএনপির অর্থ-বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী খালেদ মাহবুব শ্যামল।

×