ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে

বাথরুমে লুকিয়ে বাঁচা, এরপর দেশত্যাগ—ওবায়দুল কাদেরের স্বীকারোক্তি

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ৬ জুন ২০২৫

বাথরুমে লুকিয়ে বাঁচা, এরপর দেশত্যাগ—ওবায়দুল কাদেরের স্বীকারোক্তি

ওবায়দুল কাদের দীর্ঘ সাড়ে নয় মাস আত্মগোপনের পর নিজের অবস্থান নিয়ে কথা বললেন বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে । তিনি জানিয়েছেন, জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত নভেম্বর মাসে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন।

তিনি জানান, সরকারের পতনের দিন পাঁচই অগাস্ট তিনি সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবনে ছিলেন। আন্দোলনের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অন্য একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং সেখানেও আক্রমণের মুখে স্ত্রীসহ বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন।

“আমি একটু অনন্যোপায় হয়ে বাথরুমে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম সেখানে অনেকক্ষণ থাকতে হয়েছে,” – বলেন তিনি।

আত্মগোপনের তিন মাস ও গোপন দেশত্যাগ

সরকার পতনের পর বিভিন্ন জায়গায় বাসা বদল করে আত্মগোপনে ছিলেন কাদের।সংসদ ভবন এলাকায় অন্য একটি বাড়িতে যখন আশ্রয় নেন তিনি, তখন সঙ্গে তার স্ত্রীও ছিলেন। এক পর্যায়ে সেই বাড়িও আক্রমন হয়। তখন স্ত্রীসহ তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন বাথরুমে। 

তিনি বললেন,

"আমি একটু অনন্যোপায় হয়ে বাথরুমে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম।সেখানে অনেকক্ষণ থাকতে হয়েছে।

যদিও আওয়ামী লীগের পতনের দিন থেকে ওবায়দুল কাদেরের কোনো সাড়াশব্দ ছিল না, ফলে তাকে ঘিরে নানারকম গল্প ছিল আলোচনায়। 

তিনি নিজের দেশত্যাগ নিয়ে বলেন , 

“আমাকে বার বার বাসা পরিবর্তন করতে হয়েছে... অ্যারেস্ট হওয়ার একটা ঝুঁকি ছিল। আমাকে অনেকগুলো মেডিসিন নিতে হয়... আমি বাইপাস সার্জারির রোগী। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে দেশত্যাগ করতে হয়েছে।” 

কাদের দাবি করেন, আন্দোলনকারীদের একটি অংশ তাকে জনতার হাতে তুলে দিতে চাইলেও আরেকটি দল তাকে রক্ষা করে ইজিবাইকে করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়। 

তার দাবি অনুযায়ী, আন্দোলনকারীদের একটি দল তার শার্ট বদলে দেয়, মুখে মাস্ক পরিয়ে দেয় এবং ইজিবাইকে করে স্ত্রীসহ নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।

"রাস্তায় লোকজনের ভিড় বেশি। আমার চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি—এ কথা বলে বলে বিভিন্ন জায়গায় বুঝিয়ে সুঝিয়ে আমাদের নিয়ে গেল। আমরা বিপদমুক্ত হলাম একটা পর্যায়ে।"

কিন্তু কোথায় গিয়ে তিনি নিরাপদ হন, কোথায় আত্মগোপনে ছিলেন, সেটি প্রকাশ করেননি ওবায়দুল কাদের। তবে জানিয়েছেন,

"পাঁচই অগাস্টের তিন মাস পর আমি নভেম্বর মাসে দেশ ছেড়েছি। এটুকু বলতে পারি।"

জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ অনেকে সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে  শোনা যায়। সেনাবাহিনী প্রকাশিত ৬২৬ জনের তালিকায় ওবায়দুল কাদেরের নাম না থাকায় এ নিয়ে জল্পনা ছিল।

এই বিষয়ে কাদের বলেন,

"ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নিতে হবে, এরকম কোনো ধারণা আমার ছিল না। তখন আমি একটা প্রাইভেট বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছিলাম। প্রথম দুই দিন চেঞ্জ করে করে ছিলাম। ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে আশ্রয় নিতে হবে, এরকম চিন্তা আমি তখন করিনি।"

 

 

 

সানজানা

×