ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তারেক রহমানকে শিশু মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা- জাবি উপাচার্যের মন্তব্য ঘিরে সমালোচনার ঝড়

জাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২১:২৫, ৩১ মে ২০২৫; আপডেট: ০০:১৭, ১ জুন ২০২৫

তারেক রহমানকে শিশু মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা- জাবি উপাচার্যের মন্তব্য ঘিরে সমালোচনার ঝড়

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের একটি বক্তব্য তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং বিএনপির ভাইস চেয়ার তারেক রহমান ও তার ভাই আরাফাত রহমান কোকো প্রথম শিশু মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করা এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

গত ৩০ মে (শুক্রবার) শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য এ বক্তব্য দেন।

অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান তার বক্তব্যে বলেন, “২৫শে মার্চ রাতে জিয়াউর রহমান ঘোষণা দেন, মুক্তিযুদ্ধ করবে এবং দেশের জন্য প্রাণ দিবে। সে হিসাবে বিএনপির লোকদের বলতে হবে এদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মাতা বেগম খালেদা জিয়া এবং প্রথম শিশু মুক্তিযোদ্ধা শিশু তারেক, শিশু আরাফাত। আর শুধু জিয়াউর রহমান নয়, তার সাথে সেদিন শপথ করা ৩০০ সৈনিক, যারা দেশের জন্য প্রাণ দিতে শপথ করেছিল, তাদের সকলের স্ত্রী, সন্তানেরা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় সবার উপরে স্থান পাওয়া উচিৎ।

এদিকে উক্ত বক্তব্যের একটি ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নেটিজেনরা উপাচার্য হিসেবে তার নিরপেক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরিফুল ইসলাম নামে একজন মন্তব্য করেন, 'ভিসি স্যারের এমন মন্তব্য একটি দলের গোলামি ছাড়া কিছু না।'

আশিক ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, 'প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যদি রাজনীতি মুক্ত থাকতো তাহলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হতো।'

সোহেল আহম্মেদ নামে একজন মন্তব্য করেন, স্বৈরাচারের মতো করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা ছাড়া আর কিছুই নয় এই বক্তব্য।

এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। উপাচার্যের বক্তব্যের নারী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমানজনক উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার মেঘলা বলেন, এই মন্তব্য নারী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমানজনক। ভিসি হওয়ার পর তার দলীয় রাজনীতি থেকে সরে আসা উচিত ছিল। এখন তিনি শুধু এক মতাদর্শের প্রতিনিধি হিসেবে দাঁড়িয়েছেন, যা ভিসি পদকে ছোট করে।

একই ব্যাচের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিক্ষকরা রাজনৈতিক অবস্থান নিতে পারেন, কিন্তু ভিসি হিসেবে দলীয় আনুগত্য প্রদর্শন করা অপ্রত্যাশিত। তিনি এখন এমন একটি পদে, যেখানে সকল ভিন্নমতের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমানভাবে আচরণ করতে হয়। কিন্তু তার বক্তব্য দলীয় পক্ষপাতেরই প্রতিফলন।   

আসিফ

আরো পড়ুন  

×