ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়া কাপে প্রাপ্তি অনেক

প্রকাশিত: ০৩:২৯, ৯ মার্চ ২০১৬

এশিয়া কাপে প্রাপ্তি অনেক

টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে আবির্ভূত হলো- এটা সদ্যসমাপ্ত এশিয়া কাপের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলল- এই অর্জনকে ছোট করে দেখার কোন কারণ নেই। এশিয়ার দুই ক্রিকেট পরাশক্তি পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টাইগাররা দেশবাসীকে প্রভূত আনন্দ দিয়েছে। ফাইনালে তারা জিততে পারেনি বটে। স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছেও স্বপ্ন পূরণ হলো না- এটা দেশবাসীর জন্য আক্ষেপের হলেও সবচেয়ে বড় সান্ত¡না যে, বিশ্বক্রিকেটের যাত্রাপথে বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নতি ঘটছে। পনেরো ওভারে ১২০ রান তোলার বিষয়টি অবশ্যই প্রশংসনীয়। একটা সময় ছিল যখন ভারতের সঙ্গে খেলার আগেই বাংলাদেশ হেরে বসত। এখন লড়ছে প্রায় সমানে সমান। বাঘে-মোষের লড়াই বেশ উপভোগ্যও হচ্ছে উভয় দেশের দর্শকদের কাছে। টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বের এক নম্বর স্থান অর্জনকারী দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে খেলার আগে যতই স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুক না কেন, তাদের গেম প্ল্যান, ফিল্ড সাজানো এবং মাঠে বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই স্পষ্ট হয়ে যায় টাইগারদের তারা কী চোখে দেখতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে হারানোর জন্য ভারতকে রীতিমতো ঘাম ঝরাতে হচ্ছে আজকাল। খেলা শেষে অবশ্য ভারতীয় অধিনায়ক স্বীকার করেছেন তার স্বদেশী সাংবাদিকদের কাছে যে, বর্তমানের বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম অনেক ভাল। আমরা আগেও বলেছি, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এই এশিয়া কাপে দলবদ্ধভাবে দারুণ ঝলসে উঠেছে। শুরুতে ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে হেরেও রুখে দাঁড়িয়েছে তারা এবং বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে যে, সীমিত ওভারের ম্যাচেই শুধু নয়, কুড়ি ওভারের ম্যাচেও তারা মোটেই ‘কুঁড়ি’ নয়, শত পাপড়ি মেলতে শুরু করেছে। ফাইনালের পথে এগোতে পাকিস্তানকে যেভাবে হারায় মাশরাফি বাহিনী তাতে দেশবাসী পরম স্বস্তিবোধই করেছে। মার্চ হলো স্বাধীনতার মাস, বাঙালীর আবেগমথিত মাস। আমরা আরও বলেছিলাম, পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠে গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে ছিটকে পড়েছে বিরুদ্ধ শক্তি। এর মধ্য দিয়ে এক ধরনের চ্যাম্পিয়নই হয়ে গেছে বাংলাদেশ। কারণ দেশের মানুষের আবেগের যথাযথ মূল্য দিতে পেরেছে বাংলার বাঘেরা। এ এক পরম প্রাপ্তি। ভারতের মতো অত্যন্ত শক্তিমান একটি দলের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপে স্বল্পতম সময়ের ভেতর দু-দুবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিশেষ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এই অভিজ্ঞতা অবশ্যই তাদের অনুপ্রেরণা হবে আগামীতে দলটির বিরুদ্ধে আরও লড়াকু হতে। মোস্তাফিজ ছিল ভারতের জন্য ট্রাম কার্ড। ইনজুরির কারণে মেধাবী বোলারটি ফাইনালে খেলতে পারেনি। তবে দুই তরুণ তুর্কী আল আমিন ও তাসকিন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের যেভাবে সমীহ আদায় করে নিয়েছে সেটাও এশিয়া কাপের বিশেষ অর্জন। মাহমুদুল্লাহর কথা বলতেই হবে। শেষ তিন ওভারে তার ঝড়োগতির ব্যাট চালনা পৃথিবীর যে কোন সেরা দলের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানেরই সমতুল্য। তবে এশিয়া কাপ খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছে আমাদের ক্রিকেটারদের আরও উন্নতি করতে হবে ফিল্ডিংয়ে। রিভার্স সুইপ খেলাতেও চাই আরও আত্মবিশ্বাস। দেশবাসীর প্রত্যাশা হারুক আর জিতুক- টাইগাররা যেন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে মাঠে। ক্রিকেটের সঙ্গে যে জড়িয়ে গেছে দেশের সুনাম!
×