ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩০ জুন ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যুতে আলোচনার অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক নয় ড. আলী রীয়াজ

নিজেদের অবস্থানে অনড় রাজনৈতিক দলগুলো

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৪৬, ২৯ জুন ২০২৫

নিজেদের অবস্থানে অনড় রাজনৈতিক দলগুলো

অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক নয় ড. আলী রীয়াজ

সপ্তম দিনের বৈঠকেও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি। রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতির দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ অব্যাহত থাকলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট, উচ্চকক্ষের নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হলেও পূর্বের অবস্থানে অনড় ছিল রাজনৈতিক দলগুলো। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় পর্যায়ের রবিবার সপ্তম বৈঠকেও ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থার নিয়োগ’ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, উচ্চকক্ষের নির্বাচন প্রক্রিয়া, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া ইত্যাদি ইস্যুত রবিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দিনভর আলোচনা করেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যে আনতে পারেনি। বরং রাজনৈতিক দলগুলো নিজ নিজ দলীয় সিদ্ধান্তে অটল থাকায় শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে হয়নি বৈঠকে।
সপ্তম দিনের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। কমিশন থেকে আগামী ২ জুলাই বুধবার পরবর্তী আলোচনার দিন ধার্য করা হয়। 
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক. ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া।
রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা শেষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গত জুলাইয়ে আমরা যে ফ্যাসিবাদী নিপীড়নের মধ্যে ছিলাম তা আমাদের সকলের মনে আছে। আরেকটা জুলাই এসেছে। গত জুলাইয়ে আমরা কেউ নিজ দলের পতাকা তুলে ধরিনি, বরং সবাই দেশের পতাকা তুলে ধরেছিলাম। আমরা সবাই ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পেতে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।

আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম, আবু সাঈদের শাহাদাত বার্ষিকীতে সবাই মিলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব। কিন্তু বাস্তবে সেটা কতটা সম্ভব হবে, তা নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। আমরা খানিকটা শঙ্কিত, তারপরও জুলাই মাসের মধ্যে অবশ্যই এই প্রক্রিয়ার একটা পরিণতির দিকে যেতে হবে।
ভবিষ্যতে জনগণের আকাক্সক্ষার বিপরীতে কেউ যাতে সাংবিধানিক সংস্কার করতে না পারে, তা নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, সাংবিধানিকভাবেই এটা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যক্তির ক্ষমতা হ্রাস করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ শেষ পর্যন্ত শাসনের ক্ষেত্রে একটা একনায়কতান্ত্রিকতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই আশঙ্কাকে তারা উড়িয়ে দিতে পারছেন না। সাংবিধানিকভাবে এই রক্ষাকবচগুলো তৈরি করতে হবে। স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত।
দেশের স্বার্থে সংস্কারের আলোচনায় অগ্রগতি প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কেউই চাই না আগের অবস্থায় ফিরে যেতে। তাই দেশের স্বার্থে আপনারা বিষয়টি বিবেচনা করুন। যে অঙ্গীকার নিয়ে আমরা গত জুলাইয়ে ছিলাম, তার কতটা অর্জিত হয়েছে? আমরা কি শুধুই দলের ও নিজের স্বার্থ চাইব? নাকি দেশের স্বার্থও কিছু দেখব?
সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য কমিশন নমনীয় বলেও উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, কমিশন তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। কারণ এটা আপনাদের সবার সম্মিলিত আকাক্সক্ষা। প্রকৃতপক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোই জনগণের এক বিরাট অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবের মধ্যে দিয়েই ৭০ অনুচ্ছেদ, এনসিসি, উচ্চকক্ষ গঠনের প্রক্রিয়াসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে নমনীয় হয়েছে। কমিশন অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিপক্ষ নয়। কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আন্তরিক থাকতে চাই।
বৈঠক শেষে রাজনৈতিক দলের নেতারা যা বলেন ॥ সংলাপ শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ঐকমত্য কমিশনে আমাদের একটা শর্ত ছিল, এনসিসি মতো বা সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটির মতো কোনো বিষয় এখানে থাকলে সেটা নিয়ে আগের প্রস্তাব অনুসারে যেতে হবে। রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ক্ষেত্রে আমরা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে সংসদ সদস্যরা ভোট দিতে পারবে সেই বিষয়ে একমত হয়েছি। ঐকমত্য পোষণ করেছি। এখন যদি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সকল প্রস্তাবে আমাদেরকে শতভাগ একমত হতে বলা হয়, তাহলে তো আলোচনার দরকার ছিল না। 
তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য পোষণ হলে যে সমস্ত বিষয়গুলোতে দলসমূহ একমত হবে, সেই বিষয়গুলো একত্রিত করে জুলাই সনদ বা জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। তো এখন এখানে যদি আমাদেরকে বাধ্য করা হয়, এই সমস্ত বিষয়ে একমত হতেই হবে, সেটা তো সঠিক হলো না। 
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই দুইটা বিষয়ের প্রথম ভাগের আলোচনায় সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ কমিটি যেটা গত আগের দিনের আলোচনাতেও ছিল, এর আগেও ছিল তবে এনসিসি নামে ছিল। এই বিষয়ে আমাদের বক্তব্য আগের মতোই।

সাংবিধানিক বিভিন্ন সংস্থা, কমিশন ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। এ সংক্রান্ত যে আইনগুলো আছে, তা সংশোধন ও সংস্কার করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেত পারি। এতে গঠন প্রক্রিয়াটা আরও শক্তিশালী হবে এবং জনআকাক্সক্ষার সঙ্গে মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্মাণ করতে পারব।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের ক্ষেত্রে আমাদের দলীয় প্রস্তাব যেটা আমাদের ৩১ দফা ছিল সেই প্রস্তাবেই দিয়েছি। আমরা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং সেই ১০০ সদস্য পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষে অর্থাৎ জাতীয় সংসদে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে সেটা নির্বাচিত হবে। 
তিনি বলেন, এই গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়ে আমরা এখনো একমত হতে পারিনি। কারণ এখানে বিভিন্ন রকম প্রস্তাব এসেছে। পপুলার ভোটের সংখ্যানুপাতে নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। এরমধ্যে ৫০ শতাংশ পপুলার ভোটে ও ৫০ শতাংশ নির্ধারিত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বলা হয়েছে। এই বিষয়ে যদি কোনো আরও সুন্দর প্রস্তাব আসে, গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব আসে দেশের স্বার্থে আমরা সেটা বিবেচনা করব। তিনি বলেন, নি¤œপক্ষের বিষয়ে অর্থাৎ বিদ্যমান যেটা আমরা জাতীয় সংসদে বর্তমান পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবে। কমিশনের পক্ষ থেকে লিখিত প্রস্তাবে সেটাই বলা হয়েছে। আমরা সেটাতে একমত। হয়তো দুই একটি দল আলাদা কোনো মতামত থাকতে পারে। তবে দুইটি বিষয়ই অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে। 
সংলাপ শেষে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসমূহে নিয়োগের জন্য একটি স্থায়ী কমিটির গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে, এই প্রস্তাবিত ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবিদ্ধ সংস্থার নিয়োগ কমিটি’ (পূর্বে জাতীয় জুডিসিয়াল কাউন্সিল নামে পরিচিত) গঠনে এখনো বিএনপির আপত্তি রয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রস্তাবিত নিয়োগ কমিটি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং এর লক্ষ্য হলো নিরপেক্ষ, যোগ্য ও মেধাবী ব্যক্তিদের এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিশ্চিত করা। শতভাগ একমত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়াটা প্রায় অসম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে এই জটিলতা কমানো যায়। অধিকাংশ দল, অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সকল পক্ষকে ঐকমত্যে আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 
ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, এই কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার কোনো সংকোচন বা পরিবর্তন হবে না। এসব কমিটি কখনোই প্রধানমন্ত্রীর অধীন ছিল না এবং এক্সিকিউটিভের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাজ। তিনি আরও বলেন, আগে প্রতিটি কমিটির নিয়োগের জন্য আলাদা সার্চ কমিটি গঠন করা হতো, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের সুযোগ বেশি ছিল। নতুন প্রস্তাবিত স্থায়ী কমিটি এই সুযোগ কমাবে। কেউ কেউ এটাকে ভুল বুঝে বলতে চাচ্ছিলেন যে এ রকম একটা কমিটি থাকলে প্রধানমন্ত্রীর হাত পা বেঁধে দেওয়া হবে, আসলে এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর হাতও জড়িত নাই, পাও জড়িত নাই।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়েও জামায়াতের ইসলামীর নায়েবে আমির বলেন, আমরা ইন প্রিন্সিপাল বাই ক্যামেরাল পার্লামেন্টের ব্যাপারে আমরা একমত আছি। উচ্চ কক্ষের সদস্যরা শুধুমাত্র এমপিদের ভোটে নির্বাচিত না হয়ে জনগণের ভোটের প্রতিফলন থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, জাতির স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি এবং এর মাধ্যমে একটি ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ সম্ভব হবে যা দেশকে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন থেকে মুক্ত করে পরিবর্তন আনবে।
সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় দরকষাকষি চলছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, আমরা এখনো মৌলিক সংস্কারের বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে আছি। বিএনপিসহ কয়েকটি দলের দ্বিমতের কারণে মৌলিক সংস্কারের জায়গায় ঐকমত্যে আসা যাচ্ছে না। মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে একাত্ম হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এনসিপি। 
তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এখানে প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে সাংবিধানকিভাবে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমরা ক্ষমতার ভারসাম্য ও বর্তমান সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলছি। তবে এখনো পর্যন্ত জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরিতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। সরকার জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র না করে তবে ৩ আগস্টে এনসিপি সম-মনাদের নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবে।
সংলাপে নতুন কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, সংলাপে উচ্চকক্ষ ও নি¤œকক্ষ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উচ্চকক্ষের কোনো প্রয়োজন নেই বলে সিপিবি ও বাসদ তাদের সুস্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছে। নব্বইয়ের দশক থেকে যে সংসদ চলে আসছে, সেটিই আমাদের কাছে প্রাধান্য পায়। সেই সংসদে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে পারলে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা যেত ও অর্থের প্রভাব কমানো সম্ভব হতো। 
তিনি বলেন, সংলাপে উচ্চকক্ষ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হলেও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। আলোচনায় যে উচ্চকক্ষের কথা বলা হচ্ছে, তা অনেকাংশেই অপ্রয়োজনীয়। নানা পেশার মানুষদের মনোনয়ন দিয়ে সেখানে বসানোর যে ধারণা দেওয়া হচ্ছে, কেউ কেউ এটিকে ‘রাজনৈতিক ঘুষ’ বলেও অভিহিত করতে পারেন। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি কার্যকর, প্রতিনিধিত্বশীল ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ গঠন করা জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

×