
ক্যাশবিহীন ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও নিরাপদ করতে এবার পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) হিসেবে লাইসেন্স পেল ‘সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেড’। এটি নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকমের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের মালিকানাধীন।
গতকাল (সোমবার, ২ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক ‘সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেড’-এর নামে চূড়ান্তভাবে পিএসপি লাইসেন্স ইস্যু করেছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট থেকে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে, যা দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর এবং পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন, ২০২৪’-এর ধারা ৫(৪) অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেড’-কে শর্তসাপেক্ষে ২০২৫ সালের ২ জুন থেকে দেশের অভ্যন্তরে ই-ওয়ালেট সেবা প্রদানকারী পিএসপি হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।
পিএসপি সাধারণত ই-ওয়ালেট বা ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা নামে পরিচিত। এখানে অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে গ্রাহক তাঁর ব্যাংক একাউন্ট থেকে ব্যাংক বা অন্য মাধ্যম থেকে টাকা এনে অনলাইন কেনাকাটা, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, টিউশন ফি পরিশোধসহ বিভিন্ন ধরনের লেনদেন করতে পারেন। যেমন চীনের আলিপে। সমাধান লাইসেন্স পাওয়ায় দেশে মোট পিএসপির সংখ্যা দাঁড়াল ৯টি। এর বাইরে দেশে ১১টি পিএসও বা পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি অনাপত্তিপত্র (এনওসি) পাওয়ার শর্ত পূরণ করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেরি করে। পরে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমাধানের এনওসি মঞ্জুর করে।
এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন গভর্নর রউফের কাছে সমাধানের আবেদন পাঠানো হয়। কিন্তু সে সময় তা অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গ্রামীণ টেলিকম ও এর প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষের পরিপ্রেক্ষিতে সমাধানের আবেদনটি নিয়ে বিলম্ব করা হয়েছে বলে এমন মন্তব্য করেছেন তারা।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন আব্দুর রউফ তালুকদার। নতুন গভর্নর হন ড. আহসান এইচ মনসুর। নতুন গভর্নর এসে আবেদনটি গ্রহণ করেন। বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে শর্তসাপেক্ষে লাইসেন্স দেওয়া হয়।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার আগে গত ৮ আগস্ট পর্যন্ত ছিলেন এ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান। গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মো. আশরাফুল হাসান।
সানজানা