
প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় বেশ গুরুত্ব পেয়েছে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি)
প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় বেশ গুরুত্ব পেয়েছে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ প্রক্রিয়ার বিষয়টি। এ সময় রপ্তানিমুখী শিল্পখাতের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা এসেছে অর্থ উপদেষ্টার বক্তৃতায়। বাজেট বক্তৃতায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিওটিও) নিয়মানুযায়ী প্রণোদনা কমিয়ে আনার ঘোষণা এবং এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কাঁচামাল আমদানি ব্যয়, বন্দর খরচ, উৎপাদন খরচ প্রভৃতি কমিয়ে আনার ওপর।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা এবং সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রে পণ রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক আরোপ আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে বিদমান শুল্ক কাঠামো বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে পুনর্মূল্যায়ন করার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।
বন্ড ব্যবস্থাকে সহজীকরণ ও ব্যবসাবান্ধব করার উদ্দেশে ‘সেন্টাল বন্ডেড ওয়্যারহাউজ’ ও ‘ফ্রি জোন বন্ডেড ওয়্যারহাউজ’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ঋণপত্রের বিপরীতে সরবরাহকে ‘প্রচ্ছন্ন রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান’ এবং ‘যুগপৎ প্রচ্ছন্ন ও রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান’ এর সঙ্গায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অধিকন্তু বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের এককালীন বন্ডিং ক্যাপাসিটির বিদ্যমান প্রাপ্যতা এক-তৃতীয়াংশ হতে বৃদ্ধি করে অর্ধেক করা হয়েছে। এতে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানিতে সময় ও খরচ উভয়ই হ্রাস পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানি খাতে নগদ প্রণোদনা ১ হাজার কোটি টাকার বেশি কমানো হয়েছে। রপ্তানিকারকদের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার ২৫ কোটি টাকা। সরকারের নীতির অংশ হিসেবে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো নগদ প্রণোদনা কমানো হলো, যার লক্ষ্য হলো ধাপে ধাপে এই সহায়তা তুলে নেওয়া।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিধি অনুযায়ী ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে প্রণোদনা কমিয়ে দেওয়ার ফলে যে ক্ষতি হবে, তা পূরণে সরকার নীতিগত সহায়তা দেবে সরকার। এর মধ্যে আছে বিদ্যুৎ বিলের ওপর ছাড়, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের সুবিধা এবং ব্যবসার পরিবেশ সহজ করা।