
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণের ওপর থেকে শুল্ক ও কর রেয়াতের ঘোষণা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার উপস্থাপিত বাজেট প্রস্তাবে তিনি চাল, ডাল, চিনি, দুধ, স্যানিটারি ন্যাপকিন, কম্পিউটার মনিটর, বিদেশি মাছ, আইসক্রিম, পোশাক, জুতা, আমদানি করা প্লাস্টিক সামগ্রীসহ একাধিক পণ্যের ওপর শুল্ক-কর কমানোর ঘোষণা দেন। ফলে এসব পণ্যের দাম কমবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে প্রস্তাবিত বাজেটে স্থানীয় ঋণপত্রের কমিশনের উৎসে কর কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে।
ফলে আমদানি প্রক্রিয়া সহজ এবং সাশ্রয়ী হচ্ছে। স্বাভাবিক কারণেই চাল, ডাল, আটা, লবণ, ভোজ্যতেলসহ একাধিক কৃষি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতে পারে। স্যানিটারি ন্যাপকিন, প্যাকেটজাত তরল দুধ, পলিপ্রোপাইলিন স্ট্যাপল ফাইবারে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ই-বাইকের উৎপাদন ও উপকরণ আমদানি, ফ্রিজ-এসির কম্প্রেসার উৎপাদনের উপকরণ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব এসেছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ছাত্রছাত্রী ও অফিস-আদালতে বহুল ব্যবহৃত এই লেখনী সামগ্রীর ওপর স্থানীয় পর্যায়ের ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে।
স্যামন ও টুনাসহ বিদেশি মাছের ওপর সম্পূরক শুল্ক কমানো হয়েছে। একইভাবে বিদেশি মাংসেও শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব এসেছে। প্যাকেটজাত তরল দুধের ওপর স্থানীয় পর্যায়ে আরোপিত ভ্যাট তুলে নেওয়া হয়েছে, ফলে এসবের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে ক্রমাগত শুল্ক বৃদ্ধির পর এবার আইসক্রিমে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
পরিশোধিত চিনির আমদানিতে টনপ্রতি শুল্ক ৫০০ টাকা কমিয়ে ৪ হাজার টাকা করান প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে স্থানীয় বাজারে চিনির দাম কমতে পারে। পরিবেশবান্ধব পণ্য যেমন সুপারির খোল দিয়ে তৈরি তৈজসপত্র ও হাতে তৈরি মাটির পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতি হয়েছে। বর্তমানে এসব পণ্য কেনাকাটায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। কম্পিউটার ও কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ এবং সব ধরনের ফল ক্রয়ের জন্য স্থানীয় ঋণপত্রের কমিশনের ওপর উৎসে কর এক শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ১৬ থেকে ৪০ আসনের বাসের জন্য আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে যাত্রীবাহী বাসের দাম কমতে পারে। বর্তমানে ১৬ থেকে ৪০ আসনের বাসের জন্য ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), ৫ শতাংশ অগ্রিম কর ও ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিতে হয়।
বর্তমানে এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম কর আরোপ করা আছে। আবার গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রির সময় ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ উৎসে কর দিতে হয়। এ ছাড়া বাইরেও এলএনজি মার্জিনের বিল পরিশোধের সময় গ্যাস বিতরণ সংস্থার কাছ থেকে ৫ শতাংশ উৎসে কর কাটা হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির ফলে বিদ্যুৎ, শিল্পের উৎপাদন ও পরিবহন খাতে ব্যয় কমতে পারে।