ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

রায়পুরে নূরানী মাদ্রাসায় ছাত্র বলাৎকার, শিক্ষক রাকিব পলাতক

প্রদীপ কুমার রায়, রায়পুর লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ১৩ মে ২০২৫; আপডেট: ১৪:২২, ১৩ মে ২০২৫

রায়পুরে নূরানী মাদ্রাসায় ছাত্র বলাৎকার, শিক্ষক রাকিব পলাতক

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘটল বিবেক কাঁপানো লোমহর্ষক এক ঘটনা। ‘দারুল উলুম হোসাইনিয়া সিদ্দিকীয়া নূরানী ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা’র হেফজ বিভাগের এক কোমলমতি ছাত্রকে বলাৎকারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক রাকিব আহমেদ কাউসারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক বর্তমানে পলাতক রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার ১১ মে রায়পুর উপজেলার ১০নং ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে অবস্থিত বেসরকারি এই মাদ্রাসায় ১০ বছর বয়সী এক হেফজ ছাত্রকে নির্জন কক্ষে ডেকে এনে বলাৎকার করেন শিক্ষক রাকিব আহমেদ। ঘটনার পর শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে ফিরে গেলে তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত শিশুটিকে পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও, ঘটনায় তারা দিশেহারা। এখনো লিখিত অভিযোগ জানাতে সাহস না পেলেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মিজি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছে, অভিযুক্ত রাকিবের বিরুদ্ধে অতীতেও একাধিক অনৈতিক আচরণের অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে সেসব ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, তবে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।"

এই ঘটনার পর স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক চাপ, ভয় এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি থাকায় অনেক পরিবার এমন ঘটনায় মুখ খুলতে ভয় পান। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও এসব এলাকায় পর্যাপ্ত তদারকি ও নৈতিক নিরাপত্তার ঘাটতি প্রকট।

নিরাপদ ধর্মীয় শিক্ষা এবং শিশুদের মর্যাদা রক্ষায় এ ঘটনায় দ্রুত বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এখন সময়ের দাবি। পলাতক অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে প্রশ্ন উঠবে রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা নিয়েও।

নোভা

×