ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

জামাতে মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা

যথাযোগ্য মর্যাদায় ঈদুল আজহা উদযাপিত

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৯, ২০ জুন ২০২৪; আপডেট: ১০:৫৩, ২০ জুন ২০২৪

যথাযোগ্য মর্যাদায় ঈদুল আজহা উদযাপিত

ঈদুল আজহার নামাজ শেষে শিশুদের একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি

যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সোমবার সারাদেশে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হয়েছে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করেন। ঈদের দিন থেকে তিনদিন চলে এই কোরবানি। 
আল্লাহর রাহে নিজের জানমাল ও প্রিয়তম জিনিস সন্তুষ্ট চিত্তে বিলিয়ে দেওয়ার এক সুমহান শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মধ্যে ফিরে আসে ঈদুল আজহা। ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। পবিত্র কুরআনের সূরা কাউসারে বলা হয়েছে, ‘অতএব তোমার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড় এবং পশু কোরবানি করো।’ সূরা হজে বলা হয়েছে, ‘কোরবানি করার পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা।’ ঈদুল আজহার সঙ্গে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। শনিবার মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীসহ বিশ্বের সব মুসলমানকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান ঈদ জামাতে অংশ নেন। এই জামাতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
ভোর থেকেই প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য মুসল্লিদের ঢল নামে। সকাল সাড়ে ৭টার আগেই জাতীয় ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাসহ দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য মুসল্লিরা দোয়া করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বঙ্গভবনের ক্রিডেনসিয়াল হলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা। রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্য এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার সদস্য, সিনিয়র রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিচারক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কবি, লেখক, শিক্ষক এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ঈদ উদ্যাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলো যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন করেছে।
এদিকে কোরবানি পশুর রক্ত বা বর্জ্য দ্বারা যাতে পরিবেশ দুর্গন্ধময় না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। ঈদুল আজহার আগের জুমার খুতবায় এ বিষয়ে মুসল্লিদের সচেতন করা হয়েছে।
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদ্যাপন ॥ এবারও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশেও কিছু জায়গায় রবিবার উদ্যাপিত হয়েছে ঈদুল আজহা। অনেক গ্রামে চলেছে ঈদের আনুষ্ঠানিকতা। এসব জায়গায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকালে জামাতে অংশ নেয় অনেক মুসল্লি। ঈদের নামাজ আদায়ের পর আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করেন তারা।
ঈদুল আজহা/চট্টগ্রাম ॥ স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, যথাযথ আনুষ্ঠানিকতা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে গত ১৭ জুন সোমবার চট্টগ্রামে পালিত হয়েছে ঈদুল আজহা। এদিন নগরী ও জেলায় আয়োজিত ঈদ জামাতগুলোতে অংশ নেন লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ। নামাজের পর আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে পশু কোরবানি দেওয়া হয়। এ ছাড়া কবরস্থান, মাজারসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া মাহফিল এবং প্রয়াত স্বজনদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। 
চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে। শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সোলায়মান আলম শেঠ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ী সমাজের নেতারাসহ সর্বস্তরের মানুষ ঈদ জামাতে শরিক হন। এই মাঠে মোট দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

×