
মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা রিপোর্ট উপস্থাপন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিব্রত বাংলাদেশি বংশদ্ভুত মার্কিন নাগরিক আলী রিয়াজ।
শনিবার (২২ জুলাই) গুলাশানে সেন্টার ফর গভার্নেস স্টাডিস (সিজিএস) আয়োজিত এই রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা কাজে নিয়োজিত গবেষক আলী রিয়াজকে প্রশ্ন করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি নিয়ত মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে।
মার্কিন নাগরিক হিসাবে ওখানকার রিপোর্ট তৈরি না করে আপনি কেনো বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে গবেষণা করছেন? এই প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি। একই সঙ্গে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে দুর্দশাগ্রস্ত মানবাধিকার পরিস্থিতি কিভাবে উন্নতি হতে পারে, কারা কাজটি করতে পারেন বলে আপনি মনে করেন? এইসব প্রশ্ন করলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়েই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক এবং চ্যানেল আইএর তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন আলী রিয়াজ। অনুষ্ঠানের শুরুতে জিল্লুর রহমান জানান, আলী রিয়াজ গত চার মাস ধরে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করে এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন। এ জন্য তিনি কথা বলেছেন দেশর অন্তত ৫০ জন মানবাধিকার কর্মীর সঙ্গে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যন কামাল উদ্দিন আহমেদ, নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির, ব্লাষ্ট এর নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন প্রমুখ।
আলী রিয়াজ তার গবেষণাপ্রত্রে বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি খুবই নাজুক। পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন তারাও খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড এবং বলপূর্বক গুমের কথা বার বার অস্বীকার করছে। মানসাধিকার সংস্থাগুলোও হামলার শিকার হচ্ছে।
ব্যারিষ্টার সারা হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এখন খারাপ হয়েছে এটি ঠিক নয়। গত ২৫ বছর আগে দৃষ্টিপাত করলেও আমরা একই ধরনের পরস্থিতি দেখতে পাব। মানবাধিকার কর্মীদের ওপর চাপ নতুন করে সৃষ্টি হয়নি। এমন কোন সময় খুঁজে পাওয়া যাবে না যখন এধরনের চাপ ছিল না। ১০ বছর বা ১৫ বছর সময় ধরে বিবেচনা করলে হবে না, ২০-২৫ বছর আগেও পরিস্থিতি এমনই ছিল। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কোন কোন ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা থাকলেও পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভাল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারের আইনী সংস্থা মানবাধিকার কমিশনের কথা শোনে।
আলী রিয়াজ যাদের নিয়ে গবেষণা করেছেন অনুষ্ঠানে তাদের উপস্থিতি কিংবা অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করা হয়নি। গবেষণায় দেশের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থার কোনো সহায়তা নেয়া হয়নি বা তাদের কোনো বক্তব্যও নেই। এইসব কারনে উপস্থাপিত তথ্য আদৌ সঠিক কিনা এ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যান আলী রিয়াজ। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়েই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তিনি।
এম হাসান