ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

লন্ডনে প্রবাসীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

আগামীতে আওয়ামী লীগই আবার ভোটে জিতবে

জনকণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ৮ মে ২০২৩

আগামীতে আওয়ামী লীগই আবার ভোটে জিতবে

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত চক্রকে ‘ভোট চোর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে দেশবাসীকে তাদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দেবে। তাই সতর্ক থাকুন, যাতে বিএনপি-জামায়াত চক্র আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে না পারে। 
রবিবার স্থানীয় সময় বিকেলে লন্ডনের হোটেল ম্যারিয়টে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ঐ খুনী, চোর, দুর্নীতিবাজ বিএনপি-জামায়াত জোট এরা বাংলাদেশটাকে ধ্বংস করে দেবে। কাজেই এরা যেন আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে না পারে। জনগণ যেন এদেরকে আর ভোট না দেয়। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামীতে আওয়ামী লীগই ভোটে জিতবে। জনগণের কাজ করে জনগণের পাশে থেকেছি। জনগণের ভোটেই ইনশাল্লাহ আবার দেশের সেবা করতে পারব। সেই ভাবে সবাইকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে হবে।
আগামী নির্বাচনে বিএনপির ওপর জনগণ আস্থা রাখবে না বলে মনে করেন টানা তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরা (বিএনপি-জামায়াত চক্র) দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে, দেশের সর্বনাশ করে, জনগণ কিভাবে তাদের ওপর আস্থা রাখবে? কেন বিশ্বাস রাখবে? জনগণ তো জানে এরা ভোট চোর, এরা দুর্নীতিবাজ, এরা খুনি, এরা গ্রেনেড হামলাকারী, লুটপাটকারী, এরা খুনিদের মদতদানকারী, দেশের অর্থ চোরাকারবারি। তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে দুর্নীতির কারণে। কোকোর পাচার করা ৪০ কোটি টাকা উদ্ধার করে আমরা ফেরত এনেছি।
উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডেল্টা ২১০০ প্ল্যান করে দিলাম। আমাদের দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, দেশে কোনো গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। মানুষের কল্যাণে কাজ করে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশে কোনো মানুষ না খেয়ে থাকবে না।
লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমাদের ভোট চোর বলার সাহস পায় কোথা থেকে? ভোট চোরের বাচ্চা ভোট চোর বলে কিভাবে? তারেক রহমানের বাপ ভোট চোর, তারেকের মা ভোট চোর। সেখানে বিএনপির লোকজন কিভাবে ভোট চোর বলে আমাদেরকে? এত দুঃসাহস কই থেকে পায়!
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের মতো আওয়ামী লীগ ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের থেকে তাদের অধিকার (আদায়ের সংগ্রাম করে); জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ বার বার ক্ষমতায় গেছে। কখনই ক্ষমতা দখল করে বা চুরি করে ক্ষমতায় আসেনি।
বিএনপি নেতাদের ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেতাদের একটু জিজ্ঞেস করি, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কয়টা পার্টি অংশগ্রহণ করেছিল? আর কত ভোট পড়েছিল? সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে জনগণের ভোট চুরি করে, ২ থেকে ৩ শতাংশের বেশি ভোটই পড়েনি। তারা ঘোষণা দিয়ে দিল যে (খালেদা জিয়া) নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী!
দেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা স্লোগান দিয়ে দিয়ে জনগণকে সচেতন করেছি যে, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। যখন দেশের মানুষ দেখল খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছে, খালেদা জিয়া কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হলো, সরকার গঠন করে বসতেও পারেনি। মনে হয় ৫/৭ দিনের সংসদ বসেছিল। তারপর কিন্তু জনগণের আন্দোলনের মুখে ৩০ মার্চ পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল খালেদা জিয়া।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচন নিয়ে তো কারও কোনো কথা নেই। কথা আছে? কোনো প্রশ্ন আছে? নেই। সেই নির্বাচনের ফলাফল কি? বিএনপির ২০ দলীয় ঐক্যজোট কয়টা সিট পেয়েছিল? ২০ দলীয় ঐক্যজোট নির্বাচনে ২৯টা আর একটা উপনির্বাচনে ১টা মিলিয়ে মোট ৩০টি সিট পেয়েছে। আর বাকি সিট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট। আমরা সব পেলাম। তারা যে এত লাফালাফি করে, জনগণের কাছে তাদের অবস্থানটা কোথায়?
প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ বছরে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির সংক্ষেপে বর্ণনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে কাজ করে। দেশের জনগণ যা কিছু পেয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকার সময়ই পেয়েছে। করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধপরবর্তী বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের কোনো মানুষের খাদ্যের অভাব থাকবে না।

×