
স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ একদিকে মানসিক ও বাক প্রতিবন্ধী। আরেকদিকে অচেনা-অজানা নারী। তারওপর অন্তঃসত্ত্বা। আনুমানিক ২২-২৩ বছরের এ নারীকে নিয়ে যখন চারদিকে কানাঘুষা-টানাহেঁচড়া। তখন মানবিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন দিনমজুর বারেক-রুমা দম্পতি। তারাই ওই নারীকে ঠাঁই দেন নিজেদের ঘরে। অভাব-অনটনের মধ্যেও টানা পাঁচ মাস ওই নারীকে তারা দেখাশোনা করেন। সর্বশেষ ‘পাগলী’ নারীর প্রসব করা ফুটফুটে কন্যা শিশুটিকেও রুমা বেগম নিজের কোলে ঠাঁই দেন। বর্তমানে প্রতিবন্ধী ওই নারী আছেন হাসপাতালের বেডে। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার হরিদেবপুর ফেরিঘাট এলাকায় ওই নারী অবস্থান নেন মাস ছয়েক আগে। শাঁখা-সিঁদুর পরা ওই নারীর দিন কাটছিল নানা জনের কাছে হাত পেতে। কিন্তু এক পর্যায়ে স্থানীয় একটা শ্রেণীর মধ্যে নারীকে নিয়ে কানাঘুষা ও টানাহেঁচড়া শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ওই নারীর আশ্রয় জোটে পেশায় দিনমজুর আবদুল বারেক ও রুমা বেগম দম্পতির ঘরে। টানা পাঁচ মাস তারা ওই নারীকে আগলে রাখেন। মাঝখানে একবার অসুস্থ হলে তাকে স্থানীয় এক চিকিৎসককে দেখানো হয়। তখনই জানা যায়, ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা। শেষ পর্যন্ত দিন পনেরো আগে গত ৬ এপ্রিল ওই নারী ফুটফুটে এক শিশুকন্যা প্রসব করেন। ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা বারেক-রুমা দম্পতির আগে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তারপরও ‘পাগলী’ নারীর কোল আলো করে আসা শিশুটির ঠাঁই হয় রুমা বেগমের আঁচলের তলায়। রুমা বেগম জানান, ওই নারী মানসিক ও বাক প্রতিবন্ধী। নিজের নাম-ঠিকানা কিছুই বলতে পারেন না।
সন্তান প্রসবের পরে কোলের শিশুটি ফেলে হঠাৎ করে একদিন ওই নারী উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। কয়েক মাইল দূরের আমখোলা বাজার থেকে ওই নারীকে খুঁজে আনা হয়। সদ্যজাত শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই তিনি তার কোলে নিজ সন্তানের মতোই লালন-পালন করছেন।