
পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি ॥ করোনার কারণে ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ থাকায় খাগড়াছড়িতে গবাদিপশুর ল্যাম্পি স্ক্রিন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি গরু ল্যাম্পি স্ক্রিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে দীঘিনালা উপজেলায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। গত ১৫ দিনে শুধু দীঘিনালা উপজেলায় ২৪টি গরু মারা গেছে। এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ গরু এই রোগে আক্রান্ত। প্রতিষেধক না থাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ। ভ্যাকসিন না পওয়ায় দিশেহারা খামারিরা। বর্তমানে করোনার কারণে এই ভ্যাকসিনের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। রোগের সংক্রমণ কমাতে আক্রান্ত গরুকে আইসোলেশনে রাখার পরামর্শ দিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
প্রায় একমাস ধরে খাগড়াছড়িতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে গবাধিপশুর ল্যাম্পি স্ক্রিন রোগ। আক্রান্ত গরু থেকে ভাইরাসজনিত এই রোগ সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত গরুর সংস্পর্শে এলে অন্য গরুও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বাতাসের মাধ্যমে গরুর শরীরে এটি সংক্রমিত হয়। লাম্পি স্ক্রিন রোগে প্রতিষেধক আবিষ্কার না হলেও সাধারণত ‘গড ফক্স ভ্যাকসিন’ গরুর শরীরে প্রয়োগ করা হয়। তবে করোনার কারণে এই ভ্যাকসিনের সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে খামারি। খামারিরা জানান, ‘আক্রান্ত হওয়া গরু থেকে তা অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ছে। ভ্যাকসিন না থাকায় গরু সুস্থ হচ্ছে না। ল্যাম্পি স্ক্রিন রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের চামড়া উঠে যায়। পায়ে ক্ষত তৈরি হয়। এ সময় গায়ে গুটি দেখা যায়। পরে গুটিগুলো ফেটে যায় এবং শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় খামারি আব্দুল আজিজ জানান গত এক সপ্তাহে একটা গরুর মধ্যে ল্যাম্পি স্ত্রিন রোগ দেখা গেছে। এ সময় গরুরকে আলাদা রাখার নিয়ম থাকলেও জায়গা না থাকায় তা রাখা সম্ভব হয়নি। এতে আরও একটি গাভী এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন না থাকায় বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ানোর পর গরু সেরে উঠছে না। এলাকায় অনেকের গরু এই রোগে আক্রান্ত। এ উপজেলায় ৮০ শতাংশ গরু এই রোগে আক্রান্ত। ওষুধ খাওয়ানোর পর গরু সুস্থ হয়নি। ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। এটি এখন মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে।
দীঘিনালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জওহর লাল চাকমা জানান করোনার কারণে ল্যাম্পি স্ক্রিন রোগের প্রতিষেধক ‘গড ফক্স ভ্যাকসিন’ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত এই রোগের প্রকোপ কমার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই আক্রান্ত গরুকে আলাদা রাখার পরামর্শ দিয়েছে এ কর্মকর্তা। এছাড়া গরুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রেখে লালন পালন করতে হবে।