ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুন্সীগঞ্জে বন্দুকযুদ্ধে ব্লগার বাচ্চু হত্যার পরিকল্পনাকারীসহ দুই জঙ্গী নিহত

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

   মুন্সীগঞ্জে বন্দুকযুদ্ধে  ব্লগার বাচ্চু হত্যার পরিকল্পনাকারীসহ  দুই জঙ্গী নিহত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মুন্সীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ব্লগার বাচ্চু হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুই জঙ্গী নিহত হয়েছে। এরা হলো বাচ্চু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বোমা শামিম ওরফে কাকা এবং সকল অস্ত্রের যোগানদাতা এখলাছ। এ সময় দুই এসআই ও এক কনস্টেবল আহত হয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে এক মাদক কারবারি নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ দুটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। খবর স্টাফ রিপোর্টারদের। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কাকা ওরফে বোমা শামিম (৪০) ও এখলাছুর রহমান (৩২) নামে দুই জঙ্গী নিহত হয়েছে। নিহতরা ব্লগার শাহজাহান বাচ্চু হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। যে চারজন মিলে বাচ্চুকে হত্যা করেছে তার মধ্যে তিনজনই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলো। এর আগে বন্দুকযুদ্ধে ব্লগার বাচ্চু হত্যাকারী আব্দুর রহমান নিহত হয়। বাকি আরেক জঙ্গীকেও পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার রাত ১ টায় হাষাড়া কেসি রোডে চেক পোস্টে বন্দুকযুদ্ধে তারা নিহত হয়। এ সময় দুই এসআই ও এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন এএসআই মাসুদ ও ইলিয়াস এবং কনস্টেবল তামিম। তাদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে দুটি রাম দা, ১১টি তাজা ককটেল (হাতবোমা), একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গুলি ও একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন কালো রঙের রেঞ্জার মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। পুলিশ সুপার জানান, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তারা জানতে পারেন জঙ্গীরা শ্রীনগর এলাকায় ডাকাতির জন্য আসছে। তাই দুটি স্থানে চেক পোস্ট বসানো হয়। কেসি রোডের চেক পোস্টের সামনে দিয়ে দুটি মোটরসাইকেলে চারজন আসছিল। পুলিশ থামানোর সঙ্কেত দিতেই পুলিশের চেক পোস্টে হাতবোমা এবং গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে একটি মোটরসাইকেলের দু’জন মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও অন্য দু’জন আরেকটি মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। এই সময় পুলিশ ৫৮ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পরে শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ষোষণা করেন। শুক্রবার বেলা ১২টায় পুলিশ সুপার তার কার্র্যালয়ে ব্রিফিং করে পুরো ঘটনা তুলে ধরে বলেন এই সময় পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। বাকি দু’জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ সুপার জানান, গত ১৩ জুন ব্লগার বাচ্চু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল বোমা শামিম ওরফে কাকা। আর সকল অস্ত্রের যোগানদাতা ছিল এখলাছ। তারা দু’জনই পুরনো জেএমবির সদস্য। শামিম এই গ্রুপের বোমা তৈরি করত। তাই তাকে বোমা শামিম বলা হতো। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ব্লগার বাচ্চুকে হত্যার জন্য এখলাছ নিজে বালুরচরে বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করেছে এবং সকল আগ্নেয়াস্ত্র বিভিন্নস্থান থেকে ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে। হত্যাকান্ডের পর সে নিজেই অস্ত্রগুলো গাজীপুরে নিহত রহমানের নিকট পৌঁছে দেয়। নিহত শামিম কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার লৌক্ষা গ্রামের মৃত আব্দুল রশিদের পুত্র এবং এখলাছ জামালপুরের খামারপাড়া গ্রামের মোঃ গিয়াস উদ্দিনের পুত্র। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ গোমস্তাপুরে নয়াদিয়াড়ী এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে আবুল হোসেন বাবু (৩৭) নামে একজন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত একটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। বাবু বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের শিবরামপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আলম হোসেনের ছেলে। র‌্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার সাঈদ আব্দুল্লাহ আল মুরাদ জানান, র‌্যাব-৫ সিপিসি-১ রাজশাহীর একটি দল রাতে মাদকবিরোধী অভিযানে বের হয়। গোমস্তাপুরের নয়াদিয়াড়ী এলাকায় মাদক কেনাবেচা হচ্ছেÑ এমন খবর পেয়ে সেখানকার একটি আমবাগানে অভিযান চালায় তারা। এ সময় কয়েক মাদক কারবারি র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থেমে গেলে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে গোমস্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গোলাগুলিতে র‌্যাবের দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব। ঘটনাস্থল থেকে ১শ’ ৭৭ বোতল ফেনসিডিল, একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
×