ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

কবে চালু হবে ৩ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ?

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কবে চালু হবে ৩ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ?

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ প্রান্তিক মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যশোরে সরকার তিনটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছে। অথচ অবকাঠামো নির্মাণ হলেও চিকিৎসক না থাকায় গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনটি হাসপাতাল অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে প্রান্তিক মানুষ সরকারী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার যশোরে তিনটি ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্য হাসপাতাল স্থাপন করে। কিন্তু চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে ভবন নির্মাণের আড়াই বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও হাসপাতালের কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। চিকিৎসক চেয়ে ২০১৪ সালের ১০ জুন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হলেও তার কোন সাড়া পাওয়া যায়নি বলে সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে যে কারণে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ভবন তিনটি পড়ে আছে। ভবনের কোন কোন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। আর রাত হলেই এই ভবনগুলো চলে যায় মাদকসেবীদের দখলে। চুরি হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। জানা গেছে, সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১২ সালে অভয়নগরের সিঙ্গাড়ি ও শার্শার গোড়পাড়ায় দুটি ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্যর হাসপাতাল ভবন নির্মাণ শুরু হয়। সিঙ্গাড়িতে পাঁচ কোটি ১৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা ও গোড়পাড়ায় পাঁচ কোটি ৪৭ হাজার ৯১ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে। ভবন দুটি ২০১৪ সালের ১৯ ও ২০ মার্চ যশোর সিভিল সার্জন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল দফতর। এছাড়া একই নকশার বেনাপোলের ‘ল্যান্ডপোল মাদার এ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হাসপাতাল ভবনটি নির্মাণের জন্য ব্যয় হয় তিন কোটি ২২ লাখ ১৪ হাজার টাকা। যা স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করে গত বছর ৮ অক্টোবর। কিন্তু হাসপাতাল তিনটির একটিও এখনও চালু হয়নি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভবন তিনটি নষ্ট হওয়ার পথে। সরেজমিন যশোর শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূর শার্শার গোড়পাড়ায় ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্য হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শাহজাহান নামে একজন এমএলএসএস হাসপাতাল খুলে বসে আছেন। এখানে দ্বিতল ভবনসহ রয়েছে চিকিৎসকের আবাসিক থাকার ব্যবস্থা। কিন্তু বাস্তবে এখানে কোন কাজ হয় না। কোন যন্ত্রপতি, আসবাবপত্র নেই। আছে শুধুই ভবন। যে ভবনের কোন কোন স্থানে ইতোমধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের এমএলএসএস শাহজাহান বলেন, আমি ছাড়া এই হাসপাতালের স্থায়ী কোন জনবল নেই। রাতে কোন সিকিউরিটি না থাকায় ইতোমধ্যে ভবনের ফ্যান ও লাইট চুরি হয়ে গেছে। হাসপাতাল কবে চালু হবে তা জানেন না তিনি। যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামসুল আলম বলেন, আমাদের কাজ ভবন নির্মাণ করা। সে কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অনেক আগেই ভবন হস্তান্তর করে দিয়েছি। শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অশোক কুমার বলেন, গোড়পাড়া হাসপাতালের জন্য চিকিৎসক না থাকায় পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। তবে হাসপাতাল চালু না হলেও মাঝে মধ্যে আউটডোরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করি। যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ২০১৪ সালের ১০ জুন জনবল চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু এখনও কোন জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। এজন্য হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় সিঙ্গাড়ি হাসপাতাল ক্যাম্পাস ময়লা আর আগাছায় ভরে গেছে। যশোরের ১০ শয্যা হাসপাতালের আরেকটি বেনাপোলের ‘ল্যান্ডপোল মাদার এ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হাসপাতাল।এখানে কোন জনবল নেই। ভবনটি রাত-দিন অরক্ষিতভাবে পড়ে থাকে। এ সুযোগে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে ভবনটিতে। ল্যান্ডপোল মাদার এ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হাসপাতালটি তদারকির দায়িত্ব যশোর পরিবার পরিকল্পনা অফিসের। এই হাসপাতাল ভবনটি নির্মাণের কাজ শেষ হয় গত বছর ৮ অক্টোবর। কিন্তু এখনও হাসপাতাল চালু হয়নি। এ ব্যাপারে যশোর পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সহকারী পরিচালক ডাঃ মুনসী মনোয়ার হোসেন বলেন, জনবল ও আসবাবপত্র চেয়ে একাধিকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছি। কাজ হয়নি যে কারণে এটি চালু করা যাচ্ছে না
×