নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২৮ এপ্রিল ॥ আমতলী আইডিয়াল হাই স্কুলের মান্না নামের ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রকে বিদ্যালয়ে না আসার কারণে পরিচালক হানিফ মিয়া বেধড়ক পিটিয়ে ১১ ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাত আটটায় মান্নাকে তার বাবা উদ্ধার করে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। এ ঘটনায় হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে আমতলী থানায় মামলা হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম আমতলী গ্রামের মোশাররফ হাওলাদারের ছেলে মান্নাকে এ বছর আমতলী আইডিয়াল হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করেন। ক্লাস শুরু থেকে নিয়মিত বিদ্যালয়ে এলেও গত মঙ্গল ও বুধবার ফুফাত বোন মুকুলের বাড়ি বেড়াতে যাওয়ায় মান্না বিদ্যালয়ে আসেনি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় মান্না বিদ্যালয়ে এলে পরিচালক হানিফ মিয়া তাকে (মান্না) লাইব্রেরিতে ডেকে নেন। পরে দুদিন বিদ্যালয়ে না আসার কারণে জোড়া বেত দিয়ে মারধর শুরু করেন। ওই সময় ছাত্র অনুনয়-বিনয় করে তার (পরিচালক) পা জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে কিন্তু তাতে তিনি নিবৃত্ত হননি। পরে ছুটে গিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী সাইফুল ইসলামকে জড়িয়ে ধরে। তার কাছ থেকে জোর করে টেনে-হিঁচড়ে এনে পুনরায় মারতে থাকেন। একপর্যায়ে বিদ্যালয়ের দেয়ালে মাথা ঠেসে ধরেন। এতে ওই ছাত্রের নাকে আঘাত এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ছাত্রকে মারধর করতে নিষেধ করলে উল্টো তিনি (পরিচালক) শিক্ষকদের গালমন্দ করেন। মারধর শেষে পরিচালক ওই ছাত্রকে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বিদ্যালয়ে আটকে রাখেন। রাত আটটার দিকে ছেলের খোঁজ না পেয়ে বাবা মোশাররফ হাওলাদার বিদ্যালয়ে আসেন। পরে মান্নাকে উদ্ধার করে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অভিভাবকের উপস্থিতি টের পেয়ে পরিচালক হানিফ মিয়া বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যান।
বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র অভি, সোহাগ ও তানভির জানায়, সকালে পরিচালক স্যার ক্লাসে এসে মান্নাকে লাইব্রেরিতে ডেকে নেন। পরে ওই খানে নিয়ে তাকে মারধর করেন। তারা আরও জানায়, ক্লাসে বসে ব্যথায় কাতরাচ্ছিল মান্না। ক্লাস শেষে বাড়ি যেতে চাইলে স্যার বাড়ি যেতে দেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষক বলেন, একটি শিশুকে এভাবে মারধর করে আটকে রাখা অমানবিক। আমরা ওই ছাত্রকে মারধর করতে নিষেধ করলে তিনি (পরিচালক) উল্টো আমাদের গালমন্দ করেন। আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার হারুন অর রশিদ বলেন, মান্নার বাম পা, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: