
রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে।। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে উচ্চ শিক্ষায় একের পর এক স্বপ্ন পূরণে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলছেন প্রবাসী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুণ-তরুণীরা।
এ যেন প্রতিটি বাবা-মা ও বাঙালী কমিউনিটি ও স্বদেশের মানুষের জন্য গর্বের এক অতুলনীয় দৃষ্টান্ত। শুধু তা-ই নয়, প্রবাসে আসা বা আসার প্রত্যাশায় থাকা প্রতিটি মেধাবী স্টুডেন্টদের জন্য তা অনুকরনীয়ও বটে।
এমনি ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে শুধু ইউনিভার্সিটি থেকে নয়, স্কুল পর্যায়েও গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করে কৃতিত্বের সাক্ষর রাখল মিশিগান রাজ্যের সিটি কাউন্সিল অন্তর্ভুক্ত হেমট্রামিক হাই স্কুলে পড়ূয়া মেধাবী স্টুডেন্ট অতসী চৌধুরী।
সে সর্বোচ্চ জিপি-এ ৫ পেয়ে গ্র্যাজুয়েশন প্রাপ্তির মতো এমন বিরল সম্মান উপহার দিল বাংলাদেশীদের জন্য।
অতসী বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট তথা সিলেট মহানগরী পুলিশে সম্প্রতি পদোন্নতি প্রাপ্ত সহকারী পুলিশ কমিশনার ও হবিগন্জের কয়েকটি থানায় একসময় কর্মরত সাবেক ওসি অমূল্য চৌধুরীর সন্তান। যদিও অমূল্য চৌধুরী প্রায় ১১মাস আগে চাকুরী থেকে অবসরে আসেন এবং তার আগে এবং পরবর্তীতে মিশিগানে স্বপরিবারে বসবাস করছেন। তার অন্যান্য সন্তানরাও অত্যন্ত মেধাবী।
এমন সাফল্য অর্জনের পর আরো উচ্চতর ডিগ্রীর আকাঙ্খা নিয়ে অতসী এখন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানে ভর্তি হয়েছেন।
অতসী এ প্রতিনিধিকে জানান, তার পরবর্তী সর্বোচ্চ স্বপ্ন পূরণে বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করতে চায়।
এদিকে অতসীর ওই বিরল ফলাফল মিশিগান সহ বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটিতে চাউর হওয়া ও তা পারিবারিক,কমিউনিটি এবং ভবিষ্যৎ স্বপ্ন পূরণে অতশী সহ সকল স্টুডেন্টদেরকে আরো উৎসাহিত করার অভিপ্রায় নিয়ে 'অতসী' গ্র্যজুয়েশন সিরিমনি ও নাইট সংগ পর্বের আয়োজন করে তার পরিবার।
শনিবার (১৪ জুন) রাতে মিশিগানের ওয়ারেন সিটিস্থ বিলাসবহুল রেষ্টুরেন্টে আল-শাহী প্যালেসে আয়োজিত এই জমকালো অনুষ্ঠানে মিশিগানের বিভিন্ন সিটি এলাকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী, ভিনদেশী বাঙালী, স্কুল-ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট সহ বিভিন্ন কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গ এমনকি আমেরিকানরাও অংশ নেন। পুরো রেষ্টুরেন্ট হল রুম ছিল শত শত অতিথিদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ। এসময় অতিসি সকলকে নিয়ে বিশাল আকৃতির কেক কাটে এবং একের পর এক ফটো সেশনে লিপ্ত হন। সেই সাথে পুরো অনুস্ঠান সময় জুড়ে চলছিল মিশিগানের উদিয়মান জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পীদের সুরেলা কন্ঠে মনোমুগ্ধকর গান আর গান। চলে নৃত্য আর
ভূড়ি ভোজ।
অতসীর বাবা অমূল্য চৌধুরী মেয়ের এমন সাফল্যে এ প্রতিনিধির নিকট তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি আমেরিকায় এসে আমার সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার যে ফলাফল একের পর এক পাচ্ছি,তাতে আমি বেজায় খুশী। তবে আমার সন্তান শুধু নয়, প্রতিটি বাবা-মায়ের সন্তানরা যদি এমন দৃষ্টান্ত শিক্ষা জীবনে অর্জন করতে পারে, তাহলেই স্টুডেন্টরা প্রবাসে এসে যেমন নিজেদের ভবিষ্যৎ তৈরী করতে পারবে,তেমনি বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ তথা বাংলাদেশের সম্মান আরো বৃদ্ধি পাবে।
পারিবারিক তথ্য মতে, অতসীর শিক্ষাজীবন শুরু সিলেটের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কলার্সহোম থেকে। এমতাবস্থায় অতসী বাংলাদেশের এই স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যায়নরত ছিল। পরবর্তীতে অতসী তার বাবা-মায়ের সাথে আমেরিকা পাড়ি জমালে মিশিগানের হেমট্রামিক হাই স্কুলে নবম গ্রেডে ভর্তি হয়।
লক্ষ্য অর্জনে অতসীর একান্ত অধ্যাবসায়ের সাফল্য যেন তার জন্য অপেক্ষা করছিল। আর তা-ই যেন এবার ঘটল স্কুল গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নের মধ্য দিয়ে।
জানা গেছে, পুলিশ কর্তা অমূল্য চৌধুরীর তিন কন্যা। প্রতিটি সন্তান যেমন রুপে গুণে দেখার মতো,তেমনি বাবা-মায়ের মতো সাবলিল-অমায়িক ব্যবহার আর মেধাবানও বটে। অতসী সকলের মধ্যে ২য়।
আরো জানা গেছে, অতসীর বড় বোন বৃত্তা চৌধুরী ও জামাতা অপূর্ব ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান ডিয়ারবন থেকে ইতিমধ্যে ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। অতশীর একেবারে ছোট বোন অদিতি এখন পড়াশুনা করছে নবম গ্রেডে।
পুরো অনুষ্ঠান চলাকালে সকল অতিথিরা ছিল অতসী ও তার পরিবারের সকল সদস্যেদের নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ভূয়শী প্রশংসায় অতসী ও তার বাবা-মা দাদী মায়ের অবয়বে ছিল আনন্দের আত্মতৃপ্তি।
মুমু