ছবি: সংগৃহীত।
বর্ষাকালে বাতাসে ধুলাবালি, ফুলের রেণু, ছাঁচ ও পশুর লোমজাত অ্যালার্জেনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই নাকের অ্যালার্জিতে (অ্যালার্জিক রাইনাইটিস) আক্রান্ত হন। এই অবস্থায় শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা অতিসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে নাকের ভেতরে ফোলা, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া বা বন্ধ থাকা, চোখ চুলকানো ও গলার পেছনে শ্লেষ্মা জমে যাওয়ার মতো উপসর্গ তৈরি করে।
এই প্রসঙ্গে ভারতের কানপুরের রিজেন্সি হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা. রাজন ভরগব জানান, “ঋতুবদল, নিম্নমানের বায়ু ও ঘরের ভেতরের অ্যালার্জেনই এই অ্যালার্জির সাধারণ ট্রিগার। তবে কয়েকটি অভ্যাস পরিবর্তন করলে এবং ঘরের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখলে এই অস্বস্তিকর সমস্যাকে অনেকটাই সামলানো যায়।”
তিনি নাকের অ্যালার্জি সামাল দিতে ৪টি কার্যকর উপায় শেয়ার করেছেন—
১. স্যালাইন স্প্রে ব্যবহার করুন:
নাক ধোয়ার জন্য স্যালাইন স্প্রে বা নেটি পট ব্যবহার করলে ধুলাবালি, ফুলের রেণু ও জমে থাকা শ্লেষ্মা দূর হয়ে যায়। এতে নাক বন্ধভাব কমে ও হাঁচির সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক আরাম মেলে। নিয়মিত ব্যবহারে শ্বাসনালী খোলাও থাকে এবং ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমে আসে। তবে নিরাপদ ব্যবহারের জন্য সব সময় ফুটানো, ডিস্টিলড বা জীবাণুমুক্ত পানি ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যবহারের পর যন্ত্রটি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
২. এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন:
ঘরের ভেতরে অ্যালার্জেন কমাতে HEPA ফিল্টারযুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন। নিয়মিত কার্পেট, সোফা ও বিছানার চাদর গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন এবং ঘরের ধুলা ঝাড়ুন। এতে বাতাসে ভেসে থাকা অ্যালার্জেন যেমন পশুর লোম বা ধুলাবালি সহজে অপসারণ হয় এবং অ্যালার্জির প্রকোপ হ্রাস পায়।
৩. বাইরে থেকে ফিরে গোসল ও পোশাক পরিবর্তন করুন:
বাইরে থাকার সময় ধুলাবালি বা ফুলের রেণু শরীরের ত্বক, চুল ও জামাকাপড়ে লেগে যায়, যা ঘরে ফিরে উপসর্গ বাড়াতে পারে। তাই বাড়ি ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই গোসল ও পোশাক পরিবর্তনের অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে অ্যালার্জেন ঘরের পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
৪. হাইড্রেটেড থাকুন ও আর্দ্রতা বজায় রাখুন:
শুকনো আবহাওয়ায় নাকের শ্লেষ্মা ঝিল্লি শুকিয়ে গেলে অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। তাই পানি বেশি করে পান করুন এবং প্রয়োজনে ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। এতে নাকের শ্লেষ্মা সঠিকভাবে তৈরি হয়, যা শ্বাসনালিতে জমে থাকা অ্যালার্জেন পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে এসি বা হিটার চলা ঘরে এই ব্যবস্থা বেশি কার্যকর।
ডা. রাজন ভরগব বলেন, “নাকের অ্যালার্জি সাধারণ সমস্যা হলেও তা নিয়মিত পরিচর্যা, ট্রিগার সম্পর্কে সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা এবং ধৈর্যের সঙ্গে প্রতিদিনের যত্ন নেওয়া জরুরি।”
সূত্র: https://short-link.me/10PBs
মিরাজ খান
