ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঈদের দিনের ৭টি জাদুকরী জুস: অতিরিক্ত খাওয়া হজমে মহৌষধ

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৭ জুন ২০২৫

ঈদের দিনের ৭টি জাদুকরী জুস: অতিরিক্ত খাওয়া হজমে মহৌষধ

ছবি: সংগৃহীত

কোরবানির ঈদে বাঙালির ঘরে ঘরে চলে ভুরিভোজের আয়োজন। পোলাও, বিরিয়ানি, মাংসের বিভিন্ন পদ – তালিকা দীর্ঘ। এই উৎসবের দিনগুলোতে অনেকেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেন, যার ফলে হজমের সমস্যা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক ও ঘরে তৈরি কিছু জুস আপনার জন্য হতে পারে ওষুধের চেয়েও কার্যকর। এই ৭টি জুস কেবল হজমেই সহায়তা করবে না, শরীরকে সতেজ রাখতেও সাহায্য করবে।

১. লেবুর শরবত: সকালের সতেজতা

উপকরণ: ১. লেবু ১টি ২. হালকা গরম পানি ১ গ্লাস ৩. বিট লবণ ১ চিমটি (ঐচ্ছিক) ৪. মধু ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক)

প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে লেবুর রস বের করে নিন। এরপর হালকা গরম পানিতে লেবুর রস, বিট লবণ ও মধু মিশিয়ে নিন। ভালো করে নেড়ে খালি পেটে বা খাওয়ার ১৫-২০ মিনিট পর পান করুন। এটি হজম প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে এবং শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে।

২. আদার শরবত: হজমের সেরা বন্ধু

উপকরণ: ১. তাজা আদা ১ ইঞ্চি টুকরো ২. মধু ১ চা চামচ ৩. লেবুর রস ১ চা চামচ ৪. হালকা গরম পানি আধা কাপ

প্রস্তুত প্রণালি: আদা ভালো করে ধুয়ে কুচি করে ব্লেন্ডারে দিন। এরপর অল্প পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে রস ছেঁকে নিন। সবশেষে এতে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে পারেন। আদা হজমশক্তি বাড়াতে এবং বমি বমি ভাব কমাতে দারুণ কার্যকর।

৩. আনারসের শরবত: এনজাইমের শক্তি

উপকরণ: ১. আনারসের টুকরা ১ কাপ ২. ঠান্ডা পানি আধা কাপ ৩. বিট লবণ স্বাদমতো (ঐচ্ছিক)

প্রস্তুত প্রণালি: ব্লেন্ডারে আনারসের টুকরা ও পানি দিন। ভালো করে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিন (না ছাঁকলেও চলবে)। চাইলে একটু লবণ যোগ করতে পারেন। আনারসে থাকা ব্রোমেলিন নামক এনজাইম হজমে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

৪. পুদিনা পাতার শরবত: ঠাণ্ডা ও প্রশান্তিদায়ক

উপকরণ: ১. পুদিনা পাতা ১ মুঠো ২. লেবুর রস ১ চা চামচ ৩. পানি আধা কাপ ৪. বিট লবণ এক চিমটি

প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমেই পুদিনা পাতা ধুয়ে ব্লেন্ডারে দিন। এরপর পানি, লেবুর রস ও লবণ মিশিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করুন। চাইলে ছেঁকে নিয়ে পান করুন। পুদিনা পাতা পেটের ফোলাভাব কমাতে এবং হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে সাহায্য করে।

৫. অ্যালোভেরা শরবত: অন্ত্রের সুরক্ষায়

উপকরণ: ১. অ্যালোভেরা জেল ২ টেবিল চামচ (তাজা) ২. পানি ১ গ্লাস ৩. সামান্য মধু (ঐচ্ছিক)

প্রস্তুত প্রণালি: তাজা অ্যালোভেরা পাতার নিচ থেকে জেল সংগ্রহ করুন (কোনো হলুদ অংশ যেন না থাকে)। এরপর জেল, পানি ও মধু ব্লেন্ডারে মিশিয়ে নিন। ব্যস্ তৈরি হয়ে গেল অ্যালোভেরা শরবত। এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।

৬. পেঁপের শরবত: প্রাকৃতিক হজম সহায়ক

উপকরণ: ১. পাকা পেঁপের টুকরা ১ কাপ ২. ঠান্ডা পানি আধা কাপ ৩. লেবুর রস ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক) ৪. চিনি স্বাদমতো (ঐচ্ছিক)

প্রস্তুত প্রণালি: ব্লেন্ডারে পেঁপে ও পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। চাইলে লেবুর রস ও চিনি যোগ করুন। এই শরবত ফ্রেশ খেতে ভালো লাগে, তাই বরফ দিতে পারেন। পেঁপেতে থাকা পাপাইন নামক এনজাইম মাংস হজমে দারুণ কাজ করে।

৭. শসার শরবত: সতেজ ও ডিটক্সিং

উপকরণ: ১. মাঝারি আকারের শসা ১টি ২. পানি আধা কাপ ৩. একটু লেবুর রস বা পুদিনা পাতা (ঐচ্ছিক) ৪. হালকা লবণ ৫. স্বাদমতো চিনি (ঐচ্ছিক)

প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে শসা ভালো করে ধুয়ে কুচি করে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে পানি, শসা, সামান্য লবণ ও স্বাদমতো চিনি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। চাইলে লেবুর রস বা পুদিনা যোগ করে ছেঁকে পান করুন। শসা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের পর শরীরকে হালকা অনুভূতি দেয়।

বিশেষ টিপস: সব জুসই ফ্রেশ ও প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি। ঈদের দিনে অতিরিক্ত খাওয়ার পর যেকোনো একটি বেছে নিয়ে ১ গ্লাস পান করলে হজমে উপকার পাবেন। জুস পান করার পরপরই পানি পান করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। এই ৭টি জুস আপনার ঈদ উদযাপনকে করে তুলবে আরও স্বাস্থ্যকর ও আনন্দময়।

সাব্বির

×