হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ব্যাকআপ’ পরিকল্পনা ঘোষণা

যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা জটিলতা ও অনিশ্চয়তা নিরসনে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিল হার্ভার্ড ও টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন এফ. কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট-এর শিক্ষার্থীরা যদি মার্কিন ভিসা সমস্যার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে না পারেন, তাহলে তারা কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্ক স্কুল অফ গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক পলিসিতে ভিজিটিং স্টুডেন্ট হিসেবে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন।

এই পদক্ষেপকে প্রথম আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী contingency (বিকল্প) পরিকল্পনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সাম্প্রতিক উদ্যোগের প্রেক্ষাপটে এসেছে। ওই বিভাগ গত মাসে হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করার ক্ষমতা বাতিল করার ঘোষণা দেয়, যদিও একটি ফেডারেল আদালত ইতোমধ্যে সে সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে।

যৌথ কোর্সে ক্লাস, দুই দেশের দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক

বিবৃতিতে জানানো হয়, মঙ্ক ও কেনেডি স্কুলের শিক্ষকরা যৌথভাবে কোর্স পরিচালনা করবেন। তবে এই contingency প্ল্যান কেবল তখনই কার্যকর হবে, যদি পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষার্থী মার্কিন ভিসা বা প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে না পারেন।

হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের ডিন জেরেমি ওয়েইনস্টেইন বলেন, “এই contingency পরিকল্পনা কার্যকর থাকলে, আমাদের শিক্ষার্থীরা এই বছর ক্যাম্পাসে যেতে না পারলেও, আমরা তাদের জন্য বিশ্বমানের পাবলিক পলিসি শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারব।”

এই বিশেষ সুযোগ পাবেন কেবল তারাই, যারা ইতোমধ্যে হার্ভার্ডের যুক্তরাষ্ট্র ক্যাম্পাসে এক বছর পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত

এদিকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়িয়ে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে antisemitism (ইহুদি বিরোধিতা), ক্যাম্পাস সহিংসতা, বিদেশি সংযোগ, বিশেষ করে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক এবং রিপোর্টিং নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গবেষণা তহবিল থেকে বিলিয়ন ডলার কেটে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি কেনেডি স্কুলে

হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের দেশ থেকে। বর্তমানে ৯২টি দেশের ৭৩৯ জন শিক্ষার্থী পাবলিক পলিসি ও গভর্নমেন্ট লিডারশিপ নিয়ে অধ্যয়ন করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এই বিকল্প পরিকল্পনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা অব্যাহত রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স